শুক্রবার থেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনের কাউন্টডাউন শুরু

মত ও পথ প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী
ফাইল ছবি

আগামীকাল শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সারাদেশে শুরু হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের (মুজিববর্ষের) কাউন্টডাউন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয়ভাবে শুক্রবার বিকেলে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে মুজিব বর্ষের কাউন্টডাউন অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

এরপর প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও সব পাবলিক প্লেসে একইসঙ্গে কাউন্টডাউন শুরু হবে। এদিন সারা দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের ২৮টি পয়েন্টে, বিভাগীয় শহরগুলো, ৫৩ জেলা ও দুই উপজেলা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীতে মোট ৮৩টি পয়েন্টে কাউন্টডাউন ঘড়ি বসানো হবে।

চলতি বছরের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ পূর্ণ হবে। বাংলাদেশ ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই জন্মশতবর্ষ উদযাপন করবে। বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে একটি বাস্তবায়ন কমিটিও গঠন করা হয়েছে। খবর: বাসস

জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, আওয়ামী লীগের সাবেক ১০ মন্ত্রী, বর্তমান মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, ঢাকার দুই মেয়র, তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশ মহাপরিদর্শক, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, দুজন সাবেক গভর্নর, বিভিন্ন ধর্মের মানুষের প্রতিনিধি এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিক, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীকে রাখা হয়েছে এই কমিটিতে।

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ড.কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকে জাতীয় কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তিনি জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকায় রয়েছেন।

ড.কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডন ও নয়াদিল্লি হয়ে ১৯৭২ সালের এই দিনে স্বাধীন স্বদেশের বুকে ফিরে আসেন। যেহেতু ১০ জানুয়ারি ঐতিহাসিক দিন, তাই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কাউন্টডাউন এই ঐতিহাসিক দিনেই শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার বিকেলে মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করবেন।

কামাল চৌধুরী জানান, কাউন্টডাউনের জন্য বিভাগীয় শহর, জেলা এবং উপজেলায় ডিভাইস বসানো হবে।

জাতির পিতার শততম এ বার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে সরকারের পাশাপাশি দলীয়ভাবেও কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস শুক্রবার আতশবাজি উৎসবের মাধ্যমে শুরু হবে মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা।

দেশ-বিদেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র, প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, বঙ্গবন্ধুর নামে আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন, ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ এবং হাতে হাত রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি গড়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড হিসেবে অন্তর্ভুক্তকরণ। এছাড়া কনসার্টসহ নানা আনন্দ আয়োজন ও রক্তদানসহ সেবাধর্মী কর্মসূচি থাকবে।

১৭ মার্চ মূল অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং বঙ্গবন্ধুর সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ব্যক্তিত্বকে। তাদের মধ্যে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ প্রমুখ।

জন্মশতবার্ষিকীর মূল আয়োজন শুরু হবে ১৭ মার্চ সূর্যোদয়ের সময়ই। সকালে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। এদিন ঢাকা ও গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় একই সঙ্গে অনুষ্ঠান শুরু হবে। সকালে টুঙ্গিপাড়ায় থাকবে জাতীয় শিশু দিবসের নানান আয়োজন। এরপর বিকালে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে মূল অনুষ্ঠান। প্রকাশ করা হবে জন্মশতবার্ষিকীর বিভিন্ন স্যুভেনির, স্মারক বক্তৃতা, দেশি-বিদেশি শিল্পীদের সমন্বয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সারা দেশেই এদিন আয়োজন করা হবে আনন্দ র‌্যালি। সাজানো হবে গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনা, সড়কদ্বীপ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৭ মার্চের মূল আয়োজনে থাকবেন বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, বঙ্গবন্ধুর সমসাময়িক সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ব্যক্তিত্বরা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে