গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, যারা সরকার পরিচালনা করেন, তাদের এক নম্বর দায়িত্ব নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। মানুষের জানমাল রক্ষা করা। সেখানে তারা ব্যর্থ হচ্ছে, সেটা পত্রিকা খুললে প্রত্যেক পাতায় প্রমাণ পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, দেশে ধর্ষণ মহামারী আকার ধারণ করেছে। জেলায় জেলায় নারী ধর্ষণ হচ্ছে। এতে বোঝা যায় আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা কমেছে। এটা আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীসহ সারা দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এ কর্মসূচি পালন করে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, সরকার দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। দেশে আজ ধর্ষণ, নির্যাতন, হত্যা বাড়ছে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নেই। দেশে আজ আইনের শাসন নেই।
ধর্ষণের কথা উল্লেখ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, কোনো দলীয় চিন্তাধারা থেকে বলছি না। আজকে সব দলের মানুষকে ডেকেছি। আজকে আমরা জনগণের ঐক্য চাই। আর ৫ দল, ৭ দল ও ১০ দল নয়, আজকে সারা দেশের মানুষের ঐক্য চাই।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর হতে যাচ্ছে। আমরা উদযাপন করব। কিন্তু আমরা কী পেলাম। দেশে আজ কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটবে। দেশের জনগণ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা চাই, দেশে যেন আইনের শাসন কার্যকর হয়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায়।
ড. কামাল বলেন, আমি আশার আলো দেখছি। কারণ সাংবাদিক ভাইরা যেভাবে এগিয়ে আসছেন। তাই বলি নিরাশ হওয়া কারণ নেই, আসুন ধর্ষণের ব্যাপারে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।
তিনি বলেন, আমরা চাই এটা (ধর্ষণ) বন্ধ হোক। আর না হলে সরকারকে বলতে হবে, ‘আমরা পারি না, পারলাম না।’ তাহলে জনগণকে সুযোগ দেন যাতে তারা যোগ্য সরকার গঠন করতে পারে। তিনি বলেন, দেশে একটি সংসদ আছে বলা হয়। কিন্তু সেখানে কি এগুলো (ধর্ষণ) নিয়ে আলোচনা হচ্ছে? হচ্ছে না।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, এ দেশ কি সম্ভ্রমহানির রোল মডেল? সরকারকে সারা দেশের মানুষের এ প্রশ্ন করতে হবে। সরকারকেও জবাবদিহি করতে হবে। বিশ্বের কোনো সভ্য দেশে এমন ঘটনা ঘটতে পারে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মজনু নামে এক যুবকের গ্রেফতার প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এ ঘটনা নিয়ে সরকার জজ মিয়ার কাহিনী তৈরির চেষ্টা করছে। ধর্ষণের অপরাধে একজন দুর্বল, রোগা ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তার পক্ষে একজন মেয়েকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা অস্বাভাবিক।
মান্না বলেন, একজন রোগা ব্যক্তি একজন মেয়েকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করতে পারে না। তাকে রোধ করা একজন মেয়ের পক্ষে অসম্ভব নয়। অথচ সেই রোগা ব্যক্তিকে ধর্ষক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শনাক্ত করেছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগের একজন শিক্ষক জবানবন্দি দিয়েছেন। অথচ অন্য কোনো দলের শিক্ষক, ডাকসু ভিপিসহ কাউকে ধর্ষিতা ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম প্রমুখ।