প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেন, ঘরোয়া হোক আর বাইরে হোক, নির্বাচন-সংক্রান্ত কোনো কাজে এমপিরা অংশ নিতে পারবেন না। তারা সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করতে পারবেন না।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে সিইসি এসব কথা বলেন। এর আগে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সিইসির আগে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ দাবি করেন, এমপিরা ঘরোয়াভাবে নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে ও সভা করতে পারবেন।
সিইসি বলেন, ‘এমপিরা সবই করতে পারবেন, কেবল নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। নির্বাচনের বাইরের যে কাজ, সেখান থেকে তাদের নিষ্ক্রিয় করার কোনো সুযোগ নেই। তবে তারা নির্বাচনের কোনো সমন্বয় করতে পারবেন না। নির্বাচন-সংক্রান্ত কোনো কাজে ঘরোয়া হোক আর বাইরেই হোক, সেটা তারা করতে পারবেন না। সেটা বিধিতে বলা আছে।’
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালার ২২ নম্বর ধারা ১ নম্বর উপধারায় বলা আছে, ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচন-পূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।’
‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ অর্থ হলো- প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাহাদের সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি কর্পোরেশনের মেয়র।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা তাদের বুঝিয়ে বলেছি। নির্বাচনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপি কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো কথা বলতে পারবেন না। তারা তাদের নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারবেন।’
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা আজ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যে বৈঠক করেছেন, তা করতে পারেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘পারেন। কারণ, তারা কোনো প্রার্থীর অথবা দলের কোনো কথা নিয়ে এখানে আসেননি। তারা এসেছেন নির্বাচনের বিধিতে কী আছে সেটা জানার জন্য। এ জন্য তারা আসতেই পারেন। উনারা এখানে এসে বলেননি যে, আমাদের প্রার্থী বিপদে আছে বা তাদের কীভাবে রক্ষা করা যায়। শুধু বিধি জানার জন্য আসছেন।’
আওয়ামী লীগ থেকে দুজন সংসদ সদস্যকে নির্বাচনী সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা হয়তো নির্বাচনী ক্যাম্পে বসে সমন্বয় করছেন বা করবেন -এ বিষয়টা ওনারা করতে পারেন কি না? জবাবে নুরুল হুদা বলেন, ‘আমার মনে হয় পারেন না। আমি জানি না, তাদের কী দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমরা অফিসিয়ালি এখনো চিঠি পাইনি। যদি চিঠি পাই তখন তাদের নিষেধ করব। নির্বাচনের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।’