ডাকাতির উদ্দেশ্যে সারওয়ার আলীর বাসায় হানা : পিবিআই

মত ও পথ প্রতিবেদক

গ্রেফতার হওয়া মোহাম্মদ ফরহাদ
গ্রেফতার হওয়া মোহাম্মদ ফরহাদ

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাচেষ্টার ঘটনায় নতুন মোড় এসেছে। ভুক্তভোগীরা ঘটনাটি জঙ্গি হামলা বলে দাবি করলেও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বলছে এটি ডাকাতির ঘটনা।

সোমবার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে এমন দাবি করেন সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার বশির আহমেদ।

ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত মোহাম্মদ ফরহাদ নামের এক যুবককে আজ ভোর ছয়টায় উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাতির উদ্দেশ্যের কথা জানতে পারে সংস্থাটি। গ্রেপ্তার ফরহাদের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দায়।

ফরহাদকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্রে বিশেষ পুলিশ সুপার বশির আহমেদ বলেন, ঘটনার সঙ্গে সাতজনের সংশ্লিষ্ট রয়েছে। এর মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী হলেন ডা. সারওয়ার আলীর স্ত্রীর সাবেক গাড়িচালক নাজমুল।

গত ৫ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ড. সারওয়ার আলীর উত্তরার বাসভবনে দুই দুষ্কৃতকারীর হামলায় আহত হন তার স্ত্রী মাখদুমা নার্গিস, তাদের মেয়ে সায়মা আলী, জামাতা হুমায়ুন কবির ও দুই প্রতিবেশী।

বশির আহমেদ বলেন, গ্রেপ্তার ফরহাদ দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। গত ৩ জানুয়ারি তাকেসহ আরও একজনকে দৈনিক ৫০০ টাকা চুক্তিতে কাজে নেয় গাড়িচালক নাজমুল। পরে এ চক্রে আরও চারজন যোগ হয়। তারা আশকোনার একটি রেস্টুরেন্টে বসে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন বিকেলেও আশকোনার রোজ ভ্যালি হোটেলের ৩০৩ নম্বর কক্ষে সাতজন পরিকল্পনা করে এবং সন্ধ্যার পরে ঘটনাস্থলে যায়।

প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাকে ডাকাতি বলে মনে করছে পিবিআই। বশির আহমেদ বলেন, টাকা ও স্বর্ণালংকার নিতে তারা ওই বাড়িতে হানা দেয় বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় ফরহাদ। তবে কোনো জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা আছ কি না তা মূল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেপ্তার করলে বেরিয়ে আসবে।

ঘটনায় জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এ দুজন ছাড়া অন্যদের নাম-পরিচয় জানাননি বিশেষ পুলিশ সুপার।

ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে বশির আহমেদ বলেন, উত্তরার ওই বাসার তৃতীয় তলায় সারওয়ার আলীর মেয়ে এবং চতুর্থ তলায় তিনি থাকেন। দুর্বৃত্তদের দুজন প্রথমে তৃতীয় তলায় গিয়ে মেয়ে, মেয়ের স্বামী ও সন্তানকে জিম্মি করে। তাদের আঘাত করে সারওয়ার আলীর অবস্থান জেনে চতুর্থ তলার ফ্লাটে গিয়ে দরজায় নক করে।

দরজা খোলা হলে প্রথমে সারওয়ার আলীর স্ত্রী ও পরে সারওয়ার আলীকে জিম্মি করা হয়। পরে তৃতীয় তলা থেকে আরো একজন আসে। এ সময় তারা চিৎকার করলে দ্বিতীয় তলার থাকা এক মেজর এবং তার ছেলে গিয়ে তাদের বাঁচান। এর মধ্যে সারওয়ার আলীর মেয়ে ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহায়তা চান। পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, বাসার ভেতরে ঢুকেছিল দুজন। ফরহাদসহ বাকি পাঁচজন বাসার আশপাশে ছিল। তবে পুলিশ যে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড করিয়েছে, তারা এই সাতজনের বাইরে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে