রাসেল তাণ্ডবে চট্টগ্রামকে বিদায় করে ফাইনালে রাজশাহী

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আন্দ্রে রাসেল

বঙ্গবন্ধু বিপিএলে বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ২ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে রাজশাহী রয়্যালস।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে চট্টগ্রামের দেয়া ১৬৫ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪ বল বাকি থাকতে জয়ে পৌঁছে যায় রাজশাহী। ২২ বলে ২টি চার ও ৭টি ছক্কার সাহায্যে ৫৪ রান করে অপরাজিত থাকেন রাজশাহীর অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল।

আগামী ১৭ জানুয়ারি ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হবে খুলনা টাইগার্স ও রাজশাহী রয়্যালস।

এদিন জয়ের জন্য শেষ ৫ ওভারে তথা ৩০ বলে রাজশাহীর প্রয়োজন ছিল ৭৬ রান। হাতে ছিল ৫ উইকেট। ১৬তম ওভারে রুবেল হোসেন বোলিংয়ে এসে ১৯ রান দেন। ১৭তম ওভারে এমরিত এসে ২ উইকেট নিলেও ২০ রান দেন। ১৮তম ওভারে রুবেল এসে ৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন।

১৯তম ওভারে রানা এসে ২৩ রান দেন। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৮ রান। এই ওভারে গুনারত্নে এসে প্রথম দুই বল ডট দিলেও পরের ডেলিভারিটি ওয়াইড হয়। তারপরের ডেলিভারিটি ছিল নো। এই বলেই ছক্কা হাঁকান রাসেল। তাতে জয় নিশ্চিত হয়ে যায় রাজশাহীর।

রাজশাহী ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই চাপে ছিল। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে আফিফকে ফিরিয়ে দেন রুবেল। চতুর্থ ওভারে রান আউট হন অপর ওপেনার লিটন। এরপর ষষ্ঠ ওভারে অলক কাপালি বিদায় নিলে ইরফান শুক্কুর ও শোয়েব মালিক জুটিতে লড়তে থাকে রাজশাহী।

এই জুটি ধীরে এগোলেও উইকেটে টিকে ছিল লম্বা সময় ধরে। ১৪তম ওভারে মালিককে ফিরিয়ে দিয়ে এই জুটি ভাঙেন জিয়াউর রহমান। এরপর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক রাসেল। অন্য প্রান্ত থেকে উইকেট পড়তে থাকলেও এক প্রান্ত থেকে তাণ্ডব চালাতে থাকেন রাসেল। তিনি একাই ম্যাচ বের করে নেন।

চট্টগ্রামের বোলারদের মধ্যে রুবেল ২টি, এমরিত ২টি, রানা ১টি, মাহমুদউল্লাহ ১টি ও জিয়াউর রহমান ১টি করে উইকেট নেন।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬৪ রান করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত সূচনা করে তারা। অগ্নিমূর্তি ধারণ করেন গেইল। একের পর এক চার-ছক্কা হাঁকাতে থাকেন তিনি। পাওয়ারপ্লেতে ২ উইকেটে ৫৮ রান তোলে চট্টগ্রাম। তৃতীয় ওভারে জিয়াউর রহমান ও ষষ্ঠ ওভারে বিদায় নেন ইমরুল।

উইকেট পড়লেও দ্রুতগতিতে এগোচ্ছিল চট্টগ্রাম। দশম ওভারে গেইলকে বোল্ড করে চট্টগ্রামকে বড় ধাক্কা দেন আফিফ হোসেন। ২৪ বলে ৬টি চার ও ৫টি ছক্কার সাহায্যে ৬০ করেন গেইল।

প্রথম ১০ ওভারে ৩ উইকেটে ১১১ রান সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম। প্রথম ১০ ওভারই চট্টগ্রামের অনুকূলে ছিল। ১১তম ওভার থেকে ম্যাচ ঘুরে যায়। এই ওভারে রিয়াদ ও সোহানকে ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ নওয়াজ। তাতে দুর্বল হয়ে পড়ে চট্টগ্রাম। ১৮ বলে ৩টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৩৩ রান করেন রিয়াদ। শেষদিকে আসেলা গুনারত্নের কার্যকরী ইনিংসে ১৬৪ রান করতে সক্ষম হয় চট্টগ্রাম।

রাজশাহীর বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ ইরফান ২টি, আন্দ্রে রাসেল ১টি, মোহাম্মদ নওয়াজ ২টি, আফিফ হোসেন ১টি ও অলক কাপালি ১টি করে উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ফল: ২ উইকেটে জয়ী রাজশাহী রয়্যালস।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ইনিংস: ১৬৪/৯ (২০ ওভার)

(জিয়াউর রহমান ৬, গেইল ৬০, ইমরুল ৫, মাহমুদউল্লাহ ৩৩, ওয়ালটন ৫, সোহান ০, গুনারত্নে ৩১, এমরিত ৩, রুবেল ৮*, নাসুম ০, রানা ০*; মোহাম্মদ ইরফান ২/১৬, আবু জায়েদ ০/১৬, শোয়েব মালিক ০/১৮, কামরুল ইসলাম ০/১৬, আন্দ্রে রাসেল ১/৩৫, মোহাম্মদ নওয়াজ ২/১৩, আফিফ হোসেন ১/২০, অলক কাপালি ১/১৯)।

রাজশাহী রয়্যালস ইনিংস: ১৬৫/৮ (১৯.২ ওভার)

(লিটন ৬, আফিফ ২, ইরফান শুক্কুর ৪৫, অলক কাপালি ৯, শোয়েব মালিক ১৪, আন্দ্রে রাসেল ৫৪*, মোহাম্মদ নওয়াজ ১৪, ফরহাদ রেজা ৬, কামরুল ইসলাম ০, আবু জায়েদ ৫*; রানা ১/৪৭, রুবেল ২/৩২, এমরিত ২/৪১, নাসুম ০/১১, মাহমুদউল্লাহ ১/১০, জিয়াউর ১/১৬, গুনারত্নে ০/৮)।

ম্যাচ সেরা: আন্দ্রে রাসেল (রাজশাহী রয়্যালস)।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে