মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি উৎসবের আয়োজন করতে যাচ্ছে ভারত। শুক্রবার রাইসিনা সংলাপের শেষ দিনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টির রূপরেখা তৈরির কাজ শুরু করলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
জানা গেছে, যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি উদযাপন করার বিষয়টি ঠিক হয়েছে।
দিল্লি-তেহরান কূটনৈতিক সম্পর্কে চলতি বছর ৭০ বছরে পা দেবে। জারিফ-জয়শঙ্কর বৈঠকের পর এ ব্যাপারে বিবৃতি প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, কী কী কর্মসূচি নেওয়া হবে তা তালিকাভূক্ত করা হচ্ছে। শিগগিরই বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, জারিফের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নিয়েও। সম্প্রতি তেহরান সফরে যৌথ বাণিজ্য কমিশন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। দু’দেশ বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো বাড়াবে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, উভয় পক্ষ আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে মত বিনিময় করেছে। কথা হয়েছে পশ্চিম এশিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়েও।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এই অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা এবং সুস্থিতি বজায় রাখার প্রয়াসকে সমর্থন করবে ভারত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতের মধ্যে তেহরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিবিড় করার সিদ্ধান্ত এবং তা প্রচার করা রীতি মতো ঝুঁকিপূর্ণ। কিছু দিন ধরে ইরানের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে সরু তারের ওপর দিয়ে হাঁটতে হচ্ছে দিল্লিকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক যোগাযোগ বজায় রাখার পাশাপাশি, ইরানকেও পাশে রাখা অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। ইরানের চাবাহার বন্দরকে ব্যবহার করে আফগানিস্তান তথা পশ্চিম এশিয়ার বৃহৎ বাজারে নিজেদের পা রাখা শুরু করেছে ভারত।
ফলে সেখান থেকে পিছিয়ে আসা এখন প্রায় অসম্ভব। এমনিতেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মেনে ইরান থেকে তেল আমদানি শূন্যে নিয়ে আসা হয়েছে। সে কারণে বেগও পেতে হচ্ছে যথেষ্ট। তাই আপাতত ইরান প্রশ্নে আর কোনো আপসে নারাজ ভারত।