মিয়ানমারে রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এখনও নাগরিকত্ব অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্যাংককভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ফরটিফাই রাইটস।
সংস্থাটি জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের অন্তর্বর্তীকালীন শিবিরে নাগরিকত্ব কার্ড না দিয়ে জাতীয় ভেরিফিকেশন কার্ড দেওয়ার কথা বলা হয়েছে যেখানে তাদের পরিচয় ‘বাঙালি’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
ফরটিফাই রাইটস জানায়, রোহিঙ্গাদের ভেরিফিকেশন কার্ডে বাঙালি লিখে বোঝানো হয়েছে তারা বাংলাদেশ থেকে এসেছে এবং তাদের রোহিঙ্গা পরিচয়ের কোনো মূল্য নেই। রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব অধিকার নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানায় সংস্থাটি।
সংস্থাটি জানায়, তাদের কাছে নতুন তথ্য রয়েছে যে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এখনও রোহিঙ্গাদের ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড নেওয়ার জন্য বাধ্য করছে। এতে করে নাগরিকত্ব অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে তারা। গত বছর মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় থেকে এই কার্ড দেওয়া হয়।
ফরটিফাই রাইটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথিউ স্মিথ বলেন, এনভিসি একটি আপত্তিজনক হাতিয়ার হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত এবং সরকারের উচিত অবিলম্বে এটি বাতিল করা। নতুন প্রমাণ নিশ্চিত করে, রোহিঙ্গাদের পরিচয় মুছে ফেলা এবং তাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব অস্বীকার করার চলমান প্রচেষ্টার সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তারা জড়িত।
সম্প্রতি প্রকাশিত সংস্থাটির ২০২০ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক বিচারের জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মুখোমুখি হয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দমনমূলক ফৌজদারি আইনের ব্যবহার বাড়িয়ে দেয়ার সঙ্গে স্বাধীন মতপ্রকাশ এবং সমাবেশের অধিকারও অনেকাংশে কমিয়ে দিয়েছে।
- ‘কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জন্য ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি’
- জয়ের জন্যই বিএনপি সিটি নির্বাচনে মাঠে থাকবে : মির্জা ফখরুল
সংগঠনটির এশিয়া উপপরিচালক পিল রবার্টসন বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংসতার বিষয়ে অবশেষে আন্তর্জাতিক আদালতে ন্যায়বিচারের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে কথিত হামলার ধুয়া তুলে রাখাইনে পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে লাখ লাখ রোহিঙ্গা।
আগে থেকে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে এ সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় ১২ লাখের বেশি। কক্সবাজারের উখিয়ায় বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে তারা আশ্রয় নিয়েছে।