রাখাইনে গণহত্যা চালানোর কোনো প্রমাণ পায়নি মিয়ানমার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রোহিঙ্গা
ফাইল ছবি

প্রায় তিন বছর আগে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা চালানোর কোনো প্রমাণ পায়নি দেশটির সরকারি কমিশন। সোমবার ওই কমিশন জানিয়েছে, রাখাইনে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে তাদের অনুমান। তবে সেখানে গণহত্যার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

ইনডিপেনডেন্ট কমিশন অব ইনকোয়ারি (আইসিওই) নামের এই কমিশন গঠন করেছিল দেশটির বর্তমান সরকারই। মিয়ানমার নিরপেক্ষ দাবি করলেও কমিশনটি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ও সরকারের ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ আছে।

universel cardiac hospital

সম্প্রতি রাখাইনে গণহত্যার অভিযোগে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে গাম্বিয়া। সেই মামলার শুনানি গত মাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষে অংশ নেন নোবেলজয়ী দেশটির কার্যত সরকার প্রধান অং সাং সু চি। ২৩ জানুয়ারি সেই মামলার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। এর আগে এই প্রতিবেদন প্রকাশকে মিয়ানমারের নতুন চাল হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

সোমবার মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের হাতে তদন্ত প্রতিবেদন তুলে দিয়েছে সরকারি কমিশন। সেই প্রতিবেদনে কমিশন জানিয়েছে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট এবং ৫ সেপ্টেম্বর রাখাইনে যে অভিযান চালানো হয়েছিল, তাতে অনেকগুলো পক্ষ জড়িত ছিল। তাদের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ কিংবা ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়ে থাকতে পারে। তারমধ্যে নিরপরাধ গ্রামবাসীকে হত্যা এবং তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। তবে সেখানে গণহত্যার কোনো প্রমাণ পায়নি তারা।

এ বিষয়ে একটি বিবৃতিও দিয়েছে আইসিওই। সেই বিবৃতির বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে মিয়ানমার টাইমস।

রাখাইনে সেই সময়ের ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দায়ী করেছে মিয়ানমারের সরকারি কমিশন। এটিকে অভ্যন্তরীণ সংঘাত আখ্যা দিয়ে মিয়ানমারের সরকারি কমিশন বলেছে, মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে উত্তর রাখাইন থেকে উৎখাতে বা তাদের জাতিসত্তাকে মুছে ফেলার মতো কোনো কার্যক্রমের প্রমাণ পায়নি তারা।

যদিও জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানো হয়েছে। তাদের জাতিগতভাবে মুছে দিতেই মিয়ানমার পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কাঠামোবদ্ধ সেনা অভিযান চালায়।

২০১৭ সালে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে রাখাইনে ভয়াবহ গণহত্যা চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়। প্রাণে বাঁচতে সেসময় সাড়ে সাতলাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তবে এই বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মুখে মুখে ফিরিয়ে নিতে চাইলেও এখনো তেমন কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি মিয়ানমার।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে