কর্মসংস্থান সঙ্কটে বিশ্বের ৪৭ কোটি মানুষ : আইএলও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কর্মসংস্থান সঙ্কটে বিশ্বের ৪৭ কোটি মানুষ
ফাইল ছবি

বিশ্বের প্রায় অর্ধশত কোটি মানুষ কর্মসংস্থান সঙ্কটে ভুগছেন। অনেকে জীবন ধারণের জন্য বাধ্য হয়ে কর্মঘণ্টার তুলনায় কম পারিশ্রমিকে চাকরি করছেন। অনেকে কাজ পাচ্ছেন না। আবার সুযোগ না পেয়ে কাজের আশা ছেড়ে দিয়েছেন অনেকে। এসব মানুষের জীবনমান খুবই শোচনীয়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও এ তথ্য দিয়েছে।

জাতিসংঘের শ্রম বিষয়ক অঙ্গসংগঠন আইএলও আজ মঙ্গলবার ‘ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশাল আউটলুক: ট্রেন্ড ২০২০’ (ডব্লিইইএসও) শীর্ষক ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হচ্ছে, ২০২০ সালে বিশ্বের বেকারত্ব তালিকায় যুক্ত হবে আরও প্রায় ২৫ লাখ মানুষ।

গত নয় বছরে গোটা বিশ্বে বেকারত্বের হার স্থিতিশীল থাকলেও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির শ্লথগতি চলছেই। আর তাই নতুন করে যারা শ্রমবাজারের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন তাদের জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই। নতুন করে যে কোটি কোটি মানুষ শ্রমবাজারে যুক্ত হচ্ছেন তাদের জন্য প্রয়োজনীয় চাকরি তৈরিও হচ্ছে না।

আইএলও-এর মহাপরিচালক গাই রাইডার বলছেন, কোটি কোটি সাধারণ মানুষের জন্য কাজের মাধ্যমে একটা ভালো জীবনযাপন করা প্রায় দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। আর এসব হচ্ছে কর্মক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্য ও বাজারে চাকরির অভাবের কারণে। অনেকে তাই মানসম্মত কাজ পাচ্ছেন না, যা তাদের ভবিষ্যত জীবনকে সমৃদ্ধ করবে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী বেকার এখন ১৮ কোটি ৮০ লাখ। বেকার ছাড়াও ১৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষ কাজ করে পর্যাপ্ত পারিশ্রমিক পান না। এছাড়া কাজের সুযোগ নেই এমন ধারণার কারণে আরও ১২ কোটি মানুষ চাকরির আশা ছেড়েই দিয়েছেন। সব মিলিয়ে বিশ্বের ৪৭ কোটিরও বেশি মানুষ এখন কর্মসংস্থান সঙ্কটে।

আইএলও বলছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আগের চেয়ে আয় বৈষম্য আরও বেড়েছে। এছাড়া চলমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মক্ষেত্রের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। ২০০৪ সালে বিশ্বে জাতীয় আয়ে শ্রমখাতের অংশীদারিত্ব ৫৪ শতাংশ থাকলেও এখন তা কমে ৫১ শতাংশে নেমেছে।

বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মতো দক্ষিণ এশিয়ার নিম্ন আয়ের দেশগুলোত মানসম্মত কর্মসংস্থান তৈরির অভাব, বাড়তি জনসংখ্যা এবং কর্মসংস্থানে সবার প্রবেশের সুযোগের ঘাটতিতে দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মপরিবেশের উন্নয়ন অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। ২০২০-২১ সালে উন্নয়নশীল ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে বেকারত্ব আরও বাড়বে।

বিশেষ করে বিশ্বের প্রায় ২৬ কোটি ৭০ লাখ তরুণ এখন চাকরি, পড়াশোনা, প্রশিক্ষণ কিংবা অন্য কোনো কাজ কিছুই করছে না। এসব তরুণের বয়স ১৫ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য বাধা ও সংকোচন নীতিও এই বেকারত্বের পেছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা রাখছে বলে আইএলও তাদের প্রতিবেদনে সতর্ক করেছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে