‘ভারতের নাগরিকত্ব আইন ভয়ানক বিভাজনকারী’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতের নাগরিকত্ব আইন ভয়ানক বিভাজনকারী

ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-কে ‘বৈষম্যমূলক’ এবং ‘ভয়ানক বিভাজনকারী’ উল্লেখ করে একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সোশালিস্ট অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটস গ্রুপ (এস অ্যান্ড সি)। আগামী বুধবার ইইউ-পার্লামেন্টে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল নিয়ে আলোচনা হবে। আর পরেরদিন  পার্লামেন্টে এ বিষয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে।

টেলিগ্রাফ সংবাদমাধ্যম জানায়, ইইউ পার্লামেন্টের প্রভাবশালী ১৫৪ জন সদস্য সিএএ নিয়ে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছে। কারণ সিএএ-র কারণে রাষ্ট্র থেকে বিতাড়নের সবচেয়ে বড় সংকট তৈরি হতে পারে। ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া সিএএ আন্তর্জাতিক বেসামরিক এবং রাজনৈতিক অধিকার (আইসিসিপিআর) চুক্তির লঙ্ঘন বলেও দাবি করেছে ইইউ-র সদস্যরা।

ইউরোপের ২৬টি দেশের সমন্বয়ে তৈরি ইইউ-এর ১৫৪ জন সদস্য সোশ্যালাস্টি অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটস গ্রুপের সদস্য। তারা বিশ্বে ন্যায়বিচার, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ, সাম্য, বৈচিত্র্যতা বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ।

গত ৫ জানুয়ারি দেশটির বিখ্যাত জওহরলাল নেহেুরু বিশ^বিদ্যালয়ে সিএএ ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাও খসড়া প্রস্তাবে রয়েছে। মুখোশ পড়ে বহিরাগতদের অতর্কিত হামলায় বিশ^বিদ্যালয়ের অন্তত ২০ শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছে।

ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের দাবি যে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সংবিধানের সেক্যুলার চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ সিএএ-র কারণে ভারতে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন তৈরি হবে।

ইইউ-র সি অ্যান্ড ডি গ্রুপের মতে, ভারতের সংবিধানের ১৪নং অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক। কারণ ওই অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিকের সমানাধিকার, ধর্ম, গোত্র, বর্ণ, লিঙ্গ ও জন্মের ভিত্তিতে বৈষম্য থেকে সুরক্ষার বিধান রয়েছে। 

খসড়া প্রস্তাবনায় সিএএ-র বিরোধীদের বিক্ষোভকারীদের নাগরিক অধিকার সুরক্ষার জন্যে ভারতের সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে যারা নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছে, তাদেরকে নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। তবে মুসলিমরা এ নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

সিএএ বিলের বিরুদ্ধে দেশের সর্বত্র বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের কারণে ভারতে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন তৈরি হবে। ইতোমধ্যে, কেরালার বিধানসভায় নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়, তাদের রাজ্যে নাগরিকত্ব বিল কার্যকর করা হবে না।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে