‘বিশ্বমানের’ ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইশরাকের ইশতেহার ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইশরাক হোসেন

বৈষম্য ও বিভেদ দূর করে বিশ্বমানের ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি। ১৩ দফা ইশতেহারে ১৪৪টি প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

universel cardiac hospital

ভোটের তিন দিন আগে ইশতেহার ঘোষণাকালে ইশরাক হোসেন জানান, মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলে তিনি দূষণমুক্ত বাসযোগ্য ঢাকা গড়বেন। এছাড়া গণশুনানির মাধ্যমে সবার মতামতের মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধার‌ণ, দুর্নীতিমুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক সেবা এবং ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমন্বয়ে বাসযোগ্য ঢাকা গড়ার অঙ্গীকার করেন।

ঢাকা দক্ষিণে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী নগরবাসীর সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানে আপ্রাণ চেষ্টা করবেন বলে জানান।

ইশরাক বলেন, ‘সমস্যার উল্টো পিঠেই থাকে সমাধান। সততা নিয়ে খুঁজলেই সমাধান পাওয়া যাবে।’

এ সময় ডেঙ্গুর ভয়াবহতা প্রতিরোধ, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করাসহ নানা প্রতিশ্রুতি দেন অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক। বলেন, মেয়র হলে সবার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে।

বিএনপি মনোনীত এই মেয়রপ্রার্থী বলেন, নগরবাসীর জীবনমানের উন্নয়নেই দেশের উন্নয়ন। দূষণমুক্ত ঢাকা গড়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে দখল হওয়া খাল ও জলাশয়গুলো উদ্ধার করা হবে। প্রত্যেক ওয়ার্ডে খেলার মাঠ, কমিউনিটি সেন্টার ও ব্যায়ামাগার নির্মাণ করা হবে।

মেয়র হলে যানজট নিরসন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়ন করার করা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মেয়র হলে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও ওয়ার্ডের অলিগলির উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও ওয়ার্ডের অলিগলির রাস্তার সংস্কার ও প্রয়োজনীয় টেকসই উন্নয়ন করা হবে।’

ইশরাক বলেন, ‘রাস্তা পারাপারে প্রয়োজনীয় স্থানে অধিক সংখ্যক আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। সুপরিকল্পিত পরিচালনার ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিটি ফুটওভার ব্রিজে পর্যায়ক্রমে এলিভেটর/এস্কেলেটর (চলন্ত সিঁড়ি) স্থাপন ও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।’

ইশরাক আরও বলেন, ‘নগরীতে ওয়ান স্টপ বাস সার্ভিস চালু, মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক, অন্ধ, প্রতিবন্ধী, নারী, শিশু এবং সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য বিশেষ সেবা নিশ্চিত করা হবে। মহিলা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ সুবিধাসম্বলিত স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট সুবিধাসহ অত্যাধুনিক ও পরিচ্ছন্ন যাত্রী বিশ্রামাগার এবং যাত্রীবান্ধব পরিচ্ছন্ন বাস টার্মিনাল উপহার দেব।’

তিনি বলেন, ‘যেসব এলাকায় রাস্তায় ফুটপাত নেই প্রয়োজনীয়তার নিরিখে সেখানে ফুটপাত নির্মাণ এবং প্রয়োজনে বিদ্যমান ফুটপাত সংস্কার, আধুনিকায়ন ও প্রশস্তকরণ করা হবে। রাজধানীর বাইরে থেকে আসা যাত্রীদের বিশেষ করে রাত্রিকালে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এবং কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে কর্পোরেশনের উদ্যোগে এবং বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত ও নিরাপদ সিটি পরিবহন ব্যবস্থা চালু করা হবে।

ইশরাক হোসেন বলেন, ‘জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওয়ার্ডভিত্তিক প্রশিক্ষিত নিরপেক্ষ কমিউনিটি পুলিশ গড়ে তোলা হবে। হকারদের স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। বিদ্যমান পার্কিং ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বাণিজ্যিক এলাকায় বহুতল পার্কিং ভবন, পার্কিং লট ও আন্ডার গ্রাউন্ড পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।

ইশতেহার ঘোষণাকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, সালাউদ্দিন আহমেদ, হাবীব উন নবী খান সোহেল, নবীউল্লাহ নবী, আফরোজা আব্বাস, ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে আ স ম আবদুর রব, মাহামুদুর রহমান মান্না, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ড. রেজা কিবরিয়া, অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, সুব্রত চৌধুরী, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ছানোয়ার হোসেন, গণফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমদ, দপ্তর জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে