সারাদেশের কারা হাসপাতালগুলোতে শূন্য পদে ১১৭ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অবিলম্বে এ নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতি এ নির্দেশনা দিয়ে আগামী এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খাঁন রবিন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শাম্মী আকতার। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন মো.শফিকুল ইসলাম।
কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এ বিষয়ে আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করেন আইনজীবী মো. জে আর খাঁন (রবিন)।
গত ২৩ জুন এক আদেশে কারাগারে ধারণক্ষমতা, বন্দি ও বন্দিদের জন্য কতজন চিকিৎসক রয়েছেন তার তালিকা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
এরপর গত ১৪ জানুয়ারি আপাতত জরুরি ভিত্তিতে সারা দেশের কারা হাসপাতালগুলোতে কতজন চিকিৎসক প্রয়োজন তা জানতে চান হাইকোর্ট। একইসঙ্গে চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসক নিয়োগে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে- তাও জানতে চাওয়া হয়।
এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাইকোর্টকে জানায়, ১৬ জন চিকিৎসককে প্রেষণে কারা হাসপাতালে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৬ জনের মধ্যে ৯ জন চিকিৎসক তখনই তাদের প্রেষনে পদায়ন বাতিল করার আবেদন করে। তবে তাদের বিষয়ে আদেশ বাতিল হয়েছে কি হয়নি সেবিষয়ে অবহিত নয় স্বাস্থ অধিদপ্তর। এই ছয়জন ওএসডি থাকা অবস্থায় বিভিন্ন কোর্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। ফলে তাঁরা প্রেষণে কারাগারে পদায়নের আদেশ সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না।
আর তিনজন তিন বছরের জন্য শিক্ষা ছুটিতে ছিলেন ২০১৭ সাল থেকেই। বাকি পাঁচজন কেন যোগদান করেননি সেবিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে কোনো তথ্য নেই। এই প্রতিবেদন পাবার পর আদালত ওই ১৬ চিকিৎসককে প্রেষণে নিয়োগকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন।
সারা দেশে কারাগারগুলোতে দীর্ঘদিনের চিকিৎসক সংকট দূর করতে সরকারের পাশাপাশি কারা কর্তৃপক্ষও আলাদাভাবে উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে কারা কর্তৃপক্ষ সরাসরি চিকিৎসক নিয়োগ করার জন্য একটি বিধিমালার খসড়া তৈরি করেছে। কারা বিভাগে এক ডাক্তার নিয়োগ ইউনিট প্রতিষ্ঠার জন্য ‘সুরক্ষা সেবা বিভাগের ডাক্তার নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯’ নামে করা এই বিধিমালা অনুমোদনের জন্য এরইমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে।
- রাজউককে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়: টিআইবি
- ট্রাম্পের ‘শান্তি পরিকল্পনা’ প্রকাশ: প্রত্যাখ্যান ফিলিস্তিনের
এই খসড়া বিধিমালার একটি কপি হাইকোর্টেও দাখিল করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। এই বিধিমালা সরকার অনুমোদন করলে কারা কর্তৃপক্ষ তাদের চাহিদা মতো সরাসরি চিকিৎসক নিয়োগ করার সুযোগ পাবে। এর বাইরেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চিকিৎসক পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ।
বিধিমালার কপি আজ দেখার পর আদালত বলেন, এই বিধিমালা চূড়ান্ত করে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই জরুরি ভিত্তিতে কতজন চিকিৎসক প্রয়োজন কারা কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চান। এছাড়া চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসক নিয়োগে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।