ভয়াবহ আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তবে অনেক বাংলাদেশি এখনই দেশে ফিরতে চাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ঢাকা-সিলেট চারলেন রোড তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে সিলেটের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
মতবিনিময়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ, বেসামরিক বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, মৌলভীবাজার-২ আসনের সুলতান মো. মনসুর আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চীনে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের ফেরত আনতে আমরা বিমানের ফ্লাইটও প্রস্তুত করে রেখেছি। নিজেদের নাগরিকদের দেশে ফেরত আনার বিষয়টি চীনা কর্তৃপক্ষকে আমরা জানিয়েছি। তবে তারা বলেছে, অন্তত দুই সপ্তাহ তারা সবাইকে পর্যবেক্ষণে রাখবে। এরপরে বিদেশিরা নিজ দেশে ফিরতে পারবে।
আবদুল মোমেন বলেন, দেশে ফিরতে চাওয়া বাংলাদেশিদের তালিকা করা হয়েছে। তাদের রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। তবে অনেকে ফিরতে আগ্রহী নন। তারা বলেছেন, এই অবস্থায় দেশে ফেরা ঠিক হবে না। কারণ, এ ভাইরাসে আক্রান্তদের সব ধরনের চিকিৎসা সেবা চীন দিচ্ছে। বাংলাদেশে এলে কী ধরনের সেবা পাবেন সেটা বলা মুশকিল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশও নিজ নাগরিকদের ফেরত নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে চীনারা এখনই কোনো বিদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে না। এ বিষয়ে তারা খুব কঠোর।
মন্ত্রী জানান, চীন থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত আনা হলেও তাদেরকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। কারণ আমরা চাই না ভাইরাসটা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ুক।
বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক সৃষ্টি করা করোনা ভাইরাসে চীনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩২ জনে। এছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়েছে।
চীনের হেলথ কমিশন জানিয়েছে, আক্রান্ত ও নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই হুবেই প্রদেশের। এই প্রদেশের উহান শহর থেকে মহামারি এই ভাইরাসটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
- সুপার ওভার থ্রিলারে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ভারতের সিরিজ জয়
- ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হলে কঠোর ব্যবস্থা : প্রধানমন্ত্রী
যদিও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক লাখ। চীনে করোনা ভাইরাসে আগের থেকে আরও বেশি মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে এবং এই ভাইরাসের বিস্তার আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছে দেশটির হেলথ কমিশন।
সম্প্রতি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে ভয়ংকর এই ভাইরাস। ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ১৪টিরও বেশি শহর অবরুদ্ধ করে দিয়েছে চীন। সেখানে সকল ধরনের যান চলাচল ও বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এসব শহরে কেউ প্রবেশ করতে এবং বের হতে পারছেন না। সেখানে কয়েক শ বাংলাদেশিও আটকা পড়েছেন। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে নির্দেশ দিয়েছেন।