জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ) উপলক্ষে তাঁর নামে এবারের বইমেলা উৎসর্গ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন দিক যেন বইমেলার বিভিন্ন অঙ্গসজ্জায় ফুটে ওঠে সেভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের প্রখ্যাত স্থপতি এনামুল কবির নির্ঝর সেই পরিকল্পনাটি করেছেন। এবারের বইমেলা অসাধারণ সুন্দর একটি বইমেলা হবে। বইমেলায় শেকড়, সংগ্রাম, মুক্তি ও অর্জন- এ চার ধাপে ফুটে উঠবে বঙ্গবন্ধুর জীবনী।
একুশে বইমেলা দরজায় কড়া নাড়ছে। আর মাত্র ৩দিন পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে লাখো বাঙালির প্রাণের বইমেলা উদ্বোধন করবেন।
বইমেলা শুরুর প্রাক্কালে বাংলা একাডেমির পরিচালক ও অমর একুশে গ্রন্থমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ড. জালাল আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, এবারের বইমেলায় স্টল, প্যাভিলিয়ন, অংশগ্রহণকারী ও মেলার আয়তন অনেক বেড়েছে। প্রতিবছর স্বাধীনতাস্তম্ভ সংলগ্ন জলাধারের দক্ষিণ দিকে বইমেলার দোকান বসলেও এবার পরিধি বাড়িয়ে দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকে বিস্মৃত পরিসরে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এবার টিএসসির দিকে একটি নতুন প্রবেশপথ করা হয়েছে এবং এর পাশেই প্রস্থানপথ রাখা হচ্ছে। বাংলা একাডেমির বিপরীত দিকে আরেকটি প্রবেশপথ থাকবে পাশাপাশি রমনামন্দির গেট দিয়ে প্রস্থানপথ থাকবে। এভাবে একটি ভারসাম্যপূর্ণ মেলাপ্রাঙ্গণ প্রস্তুত করা হচ্ছে। ফলে পাঠক ও ক্রেতাদের অনেক সুবিধা হবে।
এবারের বইমেলায় ৫৬০টি প্রতিষ্ঠানকে সর্বমোট ৮৭৩ ইউনিটের স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৯ ইউনিট ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৯৪ ইউনিটের স্টল ও ৩৪টি প্যাভিলিয়ান বরাদ্দ দেয়া হয়।
বাংলা একাডেমিতে ৮৬টি ও উদ্যানে ২০৬টিসহ এক ইউনিটের ২৯৪টি স্টল, বাংলা একাডেমিতে ৬০টি ও উদ্যানে ২৩০টিসহ দুই ইউনিটের ২৯০টি স্টল, বাংলা একাডেমিতে ২১টি ও উদ্যানে ১৫৬টিসহ তিন ইউনিটের ১৭৭টি স্টল এবং বাংলা একাডেমিতে ১২টি ও উদ্যানে ১০০টিসহ চার ইউনিটের ১১২টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়।
তিনি জানান, শিশুচত্বরকে এবার দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানো হচ্ছে। বাংলা একাডেমি থেকে এবারের বইমেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা নতুন বই ‘আমার দেখা নয়াচীন’ প্রকাশিত হবে। বইটি অসাধারণ জনপ্রিয় হবে এবং পাঠক বইটি কিনবে বলে আশা করেন তিনি। এ বইটির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ জাতির সামনে তুলে ধরা সম্ভব হবে।
আর তিনদিন পর মেলা শুরু হবে, মেলা উদ্বোধনের জন্য সব স্টল প্রস্তুত কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. জালাল আহমেদ বলেন, স্টলগুলোতে এখন শেষ মুহূর্তের অর্থাৎ ফিনিশিং টাচ চলছে। আগামীকাল ৩০ জানুয়ারি ও পরশু ৩১ জানুয়ারি সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মেলায় বই প্রবেশ করতে দেয়া হবে। ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ও ২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর বইমেলা উদ্বোধন করার আগে পর্যন্ত কেউ বই নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রীর মেলা উদ্বোধন করে চলে যাওয়ার পর সবার জন্য মেলা উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।