ঢাকা সিটি নির্বাচনে ভোট রক্ষার নামে বিএনপি কেন্দ্রে কেন্দ্রে হট্টগোল করার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আর এজন্য নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে কেন্দ্র পাহারায় থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।
ঢাকা সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অভিযোগের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির স্বভাবসুলভ যে মিথ্যাচার, অপপ্রচার বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করছে, এসবের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।’
সাড়া না পেয়ে বিভ্রান্ত নাবিকের মতো বিএনপি
ঢাকা সিটি নির্বাচনে জনগণের আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে বিএনপি বিভ্রান্ত নাবিকের মত আচরণ করছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দ এবং তাদের মনোনীত প্রার্থীর কথাবার্তা এবং আচরণের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্টের প্রত্যক্ষ উস্কানি পরিলক্ষিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে খবর আছে বিএনপি ঢাকার বাইরে থেকে প্রচুর বহিরাগতকে ঢাকায় এনে জড়ো করেছে। এদের মধ্যে দাগী আসামি, চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা রয়েছে। ঢাকায় নিয়ে এসে প্রতিটি কেন্দ্রে পাঁচ শর মতো লোক রাখার পাঁয়তারা করছে। ভোট রক্ষার নামে তাদের এই অভিসন্ধি- এটা আমরা জানতে পেরেছি। তারা এই বহিরাগতদের দিয়ে নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোতে হট্টগোল পাকিয়ে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে। নির্বাচন বানচালের নীলনকশা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র করছে।
এসব তথ্য পাওয়ার পর আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে জানিয়ে কাদের বলেন, যাতে করে জনগণ ইচ্ছামতো, যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেওয়ার পরিবেশ তৈরি হয়। নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোতেও আমাদের নেতাকর্মীরা সতর্ক পাহারা দিবে। আমরা চাই কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু থাকুক।
তিনি বলেন, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব পালন করবে। আমাদেরও দায়িত্ব আছে, জনগণ যেন যাকে খুশি তাকে ভয়ভীতি মুক্ত পরিবেশে ভোট দিতে পারে, সে ব্যাপারে সাংগঠনিকভাবে আমরাও নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিচ্ছি।
বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য সংঘাতে রূপ নিতে পারে কি না প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘আমরা তো ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য, জনগণকে সহযোগিতা করার জন্য মাঠে থাকবো, কারও সঙ্গে সংঘর্ষ সৃষ্টি করার জন্য নেতাকর্মীদের কোনো নির্দেশনা দেইনি। আমাদের উদ্দেশ্য জনগণ ভোট দিতে আসবে ভোটের পরিবেশ যেন বিঘ্নিত না হয়। আমরা এখানে প্রতিপক্ষের সাথে কোন রকম সংঘাত-সংঘর্ষে যাবো না।’
কারচুপি ঠেকাতে ইভিএম উত্তম ব্যবস্থা
ইভিএম-এর মাধ্যমে সরকার কারচুপি করার সূক্ষ্ম পথ বের করেছে বিএনপির এমন অভিযোগের জবাব জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘আমি মনে করি কারচুপি ঠেকানের কৌশল হিসেবে ইভিএম হচ্ছে উত্তম ব্যবস্থা। এটা তারা মনে করতে পারে কারণ, তারা এখনও এনালগে রয়ে গেছে। তারা এখনও ডিজিটালে আসতে পারেনি। তারা আধুনিক প্রযুক্তি পছন্দ করে না। কারণ তারা নিজেরাই সেই অন্ধকারে রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি ইলেকশন বলতে বুঝে কেন্দ্র দখল, ভোট কারচুপি এসবই তাদের নির্বাচন ছিল। নির্বাচন কারচুপি মুক্ত এটা তারা কখনও চিন্তা করে না। তারা কেন্দ্র দখলের রাজনীতি অতীতে করেছে। কেন্দ্র দখল, জবর দখল এবং ভোট দখলের কোনো সুযোগ ইভিএম-এ নেই। এখানে হচ্ছে বিএনপির মূল ভয়ের কারণ।
- আরও পড়ুন >> ‘কূটনীতিকরা কোড অব কন্ডাক্ট না মানলে চলে যান’
- আরও পড়ুন >> ‘অনুমতি না নিয়ে আ’লীগের সমাবেশ করা ঠিক হয়নি’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন শফিক, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, আইন সম্পাদক নজিবুল্লা হিরু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশিদ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকী, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য রিয়াজুল কবির কাওসার, শাহাবউদ্দিন ফরাজী।