মানুষ ব্যক্তিকে নয় পদকে সম্মান করে

আবদুল মান্নান

আবদুল মান্নান
আবদুল মান্নান। ফাইল ছবি

একজন শিক্ষক হিসেবে আমি নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে করি। আজ থেকে ৪৬ বছর আগে ১৯৭৩ সালের ৬ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেছিলাম। এখনো একই পেশায় আছি। গত সাড়ে চার দশকে আমার চারটি কর্মক্ষেত্র ছিল, সবই শিক্ষা-সম্পর্কিত। এই চারটির মধ্যে আমার কর্মজীবনের সোনালি যুগটা কেটেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার অনেক ছাত্র বিভিন্ন সময়ে দেশে ও দেশের বাইরে তাঁদের কর্মগুণে প্রশংসিত হয়েছেন। একসময় আমার ডজনখানেক ছাত্র বাংলাদেশ সরকারের সচিব ছিলেন আর ডজনখানেক ছাত্র বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। এতে আমি বেশ গর্ববোধ করি। আমার এই প্রাক্তন ছাত্ররা এখনো আমাকে যেখানে দেখেন সম্মান করেন। কেউ কেউ অকপটে বলেন আমার ক্লাসের প্রথম দিনের পড়া তাঁদের এখনো মনে আছে। শিক্ষকদের সম্মান করার সংস্কৃতি এখন নেই বললেই চলে। আমি এখানে আমার নিজের কথা বলতে বসিনি। বসেছি আমার একজন প্রাক্তন ছাত্র (সরাসরি আমার বিভাগের নন) মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া একটি স্ট্যাটাস নিয়ে দু-একটি কথা বলার জন্য। শফিউল আলম কিছুদিন আগে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে বর্তমানে ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক সদর দপ্তরে বাংলাদেশের পক্ষে বিকল্প পরিচালক হিসেবে কর্মরত। আমার কর্মজীবনে যে কয়জন সরকারি আমলার সঙ্গে আমার পরিচয় বা কাজ করার সুযোগ হয়েছে তার মধ্যে শফিউল আলম অন্যতম। বাড়ি কক্সবাজারের উখিয়ায়। অত্যন্ত অমায়িক, সজ্জন ও বিনয়ী। একজন আপাদমস্তক ভদ্রলোক। সত্যি বলতে কী তাঁকে প্রচলিত অর্থে সবজান্তা আমলার মতো আচরণ করতে কখনো দেখিনি। তাঁর মতো আরো অনেক আমলা সরকারে আছেন। তবে তাঁদের সংখ্যা খুবই কম। তাঁর সঙ্গে শেষবার দেখা হয়েছিল মাস দেড়েক আগে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে। সস্ত্রীক ছুটি কাটাতে দেশে এসেছেন। তাঁর স্ত্রীর কাছে একটি ভারী ব্যাগ। বিমানবন্দরের যাত্রীসেবায় নিয়োজিত খোলা গাড়ি থেকে ব্যাগসহ নামতে তাঁর স্ত্রীর একটু অসুবিধা হচ্ছিল। আমি তাঁকে সহায়তা করতে গেলে আমার ছাত্রটি অনেকটা হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে বলেন, ‘স্যার করেন কি, করেন কি?’ তাঁকে বলি একজন প্রাক্তন ছাত্রকে একটু সহায়তা করাটাও ভাগ্যের ব্যাপার। সারা জীবন তো ছাত্রদের সাহায্যই নিয়েছি।

শফিউল আলম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া স্ট্যাটাসে তাঁর ছোট বক্তব্যে বলেছেন, তিনি অবসরে যাওয়ার পর বিভিন্ন সময় তিনি তাঁর অনেক দিনের পরিচিত সহকর্মীদের কুশল জানার জন্য ওয়াশিংটন থেকে ফোন করার চেষ্টা করেছেন; কিন্তু বেশির ভাগ সময় তাঁরা সেই টেলিফোন রিসিভ করেন না অথবা কলব্যাক করার সৌজন্যও বোধ করেন না। বোঝা গেল এতে তিনি একটু হলেও মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন। তখন তাঁর ইনবক্সে আমি একটা ভিডিও ক্লিপিং পাঠাই।

universel cardiac hospital

যুক্তরাষ্ট্রের একজন সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক আন্ডারসেক্রেটারি এক সেমিনারে প্লাস্টিকের একটি কফি কাপ হাতে নিয়ে তাঁর বক্তৃতা শুরু করেন এই ভাবে—‘গত বছরও আমি এই সেমিনারে বক্তৃতা দিতে এসেছিলাম। তখন আমি কর্মরত। বিমানবন্দরে আমার জন্য প্রটোকল অফিসার বা গাইড অপেক্ষা করছিল। বাইরে অপেক্ষারত লিমোজিন। অনুষ্ঠানস্থলে এসে এক কাপ কফি চাইলে গরম পানির পট, কফি, চিনির কিউব, একাধিক ব্লেন্ডের কফির পাত্র এনে আমার সামনে একজন রেখে গেলেন। এই বছর একই জায়গায় একই সেমিনার। বক্তাও আমি। বিষয়েরও কোনো পরিবর্তন হয়নি। শুধু একটি জিনিসের পরিবর্তন হয়েছে। গত বছর আমি সরকারি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলাম, এখন অবসরে। এবার বিমানবন্দরে আমার জন্য কেউ অপেক্ষা করছিল না। আমি বিমানবন্দর থেকে একটি ট্যাক্সি নিয়ে সোজা এখানে। অনুষ্ঠানস্থলে ঢোকার পর এক কাপ কফি চাইলাম। একজন লবির এক কোনায় রক্ষিত কফি মেকার মেশিন দেখিয়ে দিল। সেখানে কিছু প্লাস্টিক কাপ রাখা ছিল। একটি কাপে রেডিমিক্স কফি নিয়ে এখন আমি আপনাদের সামনে। এই ঘটনা আমাকে মনে করিয়ে দেয় যে আজকাল মানুষ ব্যক্তিকে সম্মান করে না, পদ তাদের কাছে মহামূল্যবান। এই বলে তিনি তাঁর বক্তৃতা শুরু করলেন। আমার ছাত্র শফিউলের ক্ষেত্রে একই কথা শতভাগ সত্য।

মানুষের চেয়ে পদ বড়, এটি নতুন কিছু নয়, অন্তত আমার অভিজ্ঞতা তা-ই বলে। আমার আগের কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন শেষে এই সত্যটা আবার নতুন করে বুঝতে পারলাম। চার বছর নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি। মেয়াদ শেষের পরদিনই বুঝতে পারি আমার কোন কোন সহকর্মীর কাছে আমি কতটা অপাঙক্তেয় ছিলাম। যেহেতু আমার পর দায়িত্ব নিয়ে ওই পদে নতুন কে আসছেন তা জানা যায়নি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফোন করে সচিবের কাছে জানতে চাইলাম কাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেব? অনেকের ধারণা ছিল আমি একই পদে বোধ হয় আবার নিয়োগপ্রাপ্ত হচ্ছি যেহেতু যে আইনে প্রতিষ্ঠানটি চলে সেই আইনটি বঙ্গবন্ধু করে গিয়েছিলেন এবং তাতে লেখা ছিল একমাত্র প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য পুনর্নিয়োগ পেতে পারেন, কোনো সদস্য নন। বঙ্গবন্ধুর করা আইন লঙ্ঘন করে সদস্য পুনর্নিয়োগ হয়েছে একাধিকবার। অনেকে বঙ্গবন্ধুর নাম নিতে নিতে মুখে ফেনা তোলেন; কিন্তু তাঁর করা আইন লঙ্ঘন করতে তাঁরা দুই মিনিট চিন্তা করেন না। অবশ্য এসব নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে সরকারের এখতিয়ারে। তবে সরকারকে যাঁরা পরিচালিত করেন তাঁরা হয় আইন সম্পর্কে অজ্ঞ অথবা এসব আইনকানুন নিয়ে তাঁদের কোনো মাথাব্যথা নেই। সংশ্লিষ্ট সচিব জানালেন একজন সদস্যের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করলেই চলবে। তখন আমি প্রতিষ্ঠানের অন্য আরেকজন জ্যেষ্ঠ সদস্যের কাছে দায়িত্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিলাম। সেই সদস্য সবার চেয়ে বরিষ্ঠ ছিলেন না; কারণ তিনি তাঁর নিয়মিত কর্মদিবসে কয়েক দিন গ্যাপ দিয়ে তাঁর আগের কর্মক্ষেত্র থেকে অবসর নেওয়ার জন্য সেখানে যোগ দিয়েছিলেন। একজন ব্যক্তি একই সময় দুটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকতে পারেন না। তার পরও তাঁর কাছে দায়িত্ব লিখে দিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিলাম। অবাক কাণ্ড, পরদিন তিনি প্রথমে গিয়ে আমার দপ্তর থেকে আমার নেম প্লেটটা খুলে ফেললেন। সব ব্যক্তিগত স্টাফকে অন্যত্র বিদায় করে দিলেন। অথচ আমার দায়িত্ব পালনকালে তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা ভালো ছিল বলে মনে করেছি। বুঝলাম সেটা ছিল আমার পদের প্রতি তাঁর সম্মান, ব্যক্তি আমার প্রতি নয়। সেই সব কথা অন্য কোনো সময় লেখার ইচ্ছা রাখি।

জনাপাঁচেক উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী জানতে চাইলেন এই পদগুলোতে নতুন কার নাম প্রস্তাব করা যায়? মন্ত্রী মহোদয়কে বলি যাঁরা দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁরা ভালো কাজ করেছেন, তাঁদের পুনর্নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া যেতে পারে। তা-ই হয়েছিল, শুধু একজন ছাড়া। তাঁরা পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য পুনর্নিয়োগ পেয়েছিলেন। এখন একজন ছাড়া অন্য কেউ ফোনও ধরেন না। মনে করেন, আমি বুঝি কোনো তদবিরের জন্য ফোন করছি। অথচ তাঁরা জানেন, আমি দায়িত্ব পালনকালে তাঁদের কাছে কোনো তদবির করিনি। চেষ্টা করেছি তাঁদের প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কাজ করতে। শফিউলেরও নিশ্চয়ই একই অভিজ্ঞতা। অনেক সময় একজন ব্যক্তি কোনো একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেলে তাঁর আচার-আচরণ কোনো কারণ ছাড়া বদলে যায়। দু-একজনকে জানি, তাঁরা তাঁদের কর্মক্ষেত্রের বাইরে কোনো সফরে গেলে তাঁদের জন্য সাদা গাড়ি না কালো গাড়ি দিতে হবে তা আগে বলে দেন। কেউ কেউ কাজের প্রথম দিনেই গানম্যান চান। অফিসের কর্মচারীদের সঙ্গে বাড়ির কাজের লোকের মতো ব্যবহার করেন। যখন আমি আমার আগের দায়িত্বে ছিলাম, কোনো প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তা সহজে করা যেত। যাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় বের করে দিতেন তাঁরা এখন আর ফোন ধরেন না। মেসেজ পাঠালেও না।

তবে সমাজে এখনো সব মানুষ তো নষ্ট হয়ে যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কোনো কথা বললে আমাকে অনেকে দলকানা মনে করেন। তবে কিছু সত্য কথা তো বলতে হয়। তখন আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। দায়িত্বটা অনেকটা তিনি নিজেই ডেকে আমাকে দিয়েছেন। অত্যন্তহ ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপত্সংকুল দায়িত্ব। কারণ তখন এই বিশ্ববিদ্যালয় একটি মৌলবাদী ছাত্রসংগঠনের নিয়ন্ত্রণে। অন্য কোনো ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের এখানে প্রবেশ অনেকটা নিষিদ্ধ। সাহস করে দায়িত্বটা নিলাম। আমার সহায়তায় এগিয়ে এলেন আমার বেশ কিছু সহকর্মী আর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর-উত্তম। প্রথম যে অচিন্তনীয় কাজে হাত দিলাম তা ছিল সব ছাত্রাবাসের ছাত্রদের সব সিট বাতিল করে অনুষদভিত্তিক সিট বণ্টন। এটি একটি অভূতপূর্ব ঘটনা। দখলদার ছাত্রসংগঠনটি কেন তা মেনে নেবে। শুরু হলো ক্যাম্পাস অচল করে দেওয়ার প্রচেষ্টা। সবাইকে নিয়ে রুখে দাঁড়ালাম। হলের সিট পুনর্বণ্টন চলবে। এক রাতে আমার শহরের বাসভবনে বোমা হামলা হলো। পরদিন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি আমাকে ফোন করে বিস্তারিত জানতে চান। আমি অভিভূত। তিনি একটা ফোন নম্বর দিয়ে বললেন প্রয়োজনে আমি যেন তাঁকে এই নম্বরে ফোন করি। তা করার প্রয়োজন হয়নি। একবার সেই নম্বরে ফোন করেছিলাম। তখন তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে গণভবনে ফিরেছেন। তাঁকে তাঁর মেয়াদকালের সফলতার জন্য অভিনন্দন জানানোর জন্য ল্যান্ড লাইনে ফোন করলে দেখি কোনোটাতেই লাইন যাচ্ছে না। অগত্যা তাঁর দেওয়া ওই নম্বরে ফোন করলে জানতে পারি গণভবনের সব ফোনের লাইন কেটে দিয়েছে। তাঁর সঙ্গে অনেক দিন কাজ করেছি কিন্তু তাঁকে বদলাতে দেখিনি। আরেকজন মানুষের কথা না বললেই নয়। তিনি প্রয়াত এ এইচ কে সাদেক। শেখ হাসিনার ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। একজন জাত আমলা। রাজনীতিতে এসেছেন অবসরের পর। তিনি আমাকে যথেষ্ট স্নেহ করতেন। কোনো প্রয়োজন হলে তিনি সরাসরি ফোন করতেন, কোনো এপিএসকে দিয়ে নয়। আমাদের দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি কাকে নিজে ফোন করতে হবে আর কাকে এপিএস দ্বারা ফোন করাতে হবে তা বোঝেন না। তাঁর স্ত্রী ইসমত আরা সাদেক এমপি কয়েক দিন আগে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। এক রাতে সাদেক সাহেব আমাকে ফোন করে বললেন তাঁকে ১২ জন সিনিয়র শিক্ষকের নাম দিতে হবে, যাঁরা সরকার ঘোষিত ১২টি নতুন প্রস্তাবিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমে প্রকল্প পরিচালক হবেন, তারপর উপাচার্য। আরেকবার ফোন করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য হওয়ার মতো যোগ্যতা আছে তেমন দুজন শিক্ষকের নাম প্রস্তাব করতে। করেছিলাম। তাঁরা নিয়োগ পেয়েছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন শেষে সাড়ে চার বছরের মাথায় যখন আমার পদে অন্য আরেকজন নিয়োগ পেলেন, সাদেক সাহেব আমাকে ফোন করে আমার কাজের জন্য প্রশংসা করে বললেন ঢাকায় এলে যেন তাঁর সঙ্গে দেখা করি। তাঁকে বলি, ‘স্যার, এখন তো আমি সহজে সচিবালয়ে ঢুকতে পারব না।’ জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাকে নিয়ে আসব।’ শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় এমন সদস্য কয়জন আছেন যাঁরা পদকে নয়, মানুষকে সম্মান করতে জানেন? আছেন তবে তাঁদের সংখ্যা হাতে গোনা। আসলে বেশির ভাগ মানুষ ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে যান। তাঁরা বোঝেন না ক্ষমতা অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। ভালো মানুষ হওয়াটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আমার ওপরের কথাগুলো কোনো ব্যক্তিকে উদ্দেশ করে লেখা নয়। আমার কর্মজীবনের কিছু অভিজ্ঞতা, যা আমার ছাত্র শফিউল আমাকে লিখতে অনুপ্রাণিত করেছেন। কর্মজীবনের ভালো-মন্দ নিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা আছে। চেষ্টা করব তা নির্মোহভাবে লিখতে। সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব শফিউল আলমকে বলি আপনি যে সত্য কথাগুলো বলেছেন তা প্রত্যাশিত। আপনার সাবেক সহকর্মীদের আচরণে হয়তো আপনি কিছুটা বেদনাহত হয়েছেন তবে আপনার যাঁরা প্রকৃত বন্ধু বা হিতাকাঙ্ক্ষী তাঁরা আপনাকে চিনেও না চেনার ভান করবেন না। ক্ষমতার বাইরে থাকলে প্রকৃত বন্ধু কারা তা চেনা সহজ হয়। আপনার মঙ্গল কামনা করছি।

লেখক : বিশ্লেষক ও গবেষক

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে