‘বাংলাদেশ ও ভারতের কাছ থেকে শিখুন ইমরান’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

করোনাভাইরাস-ইমরান খান
ছবি : ইন্টারনেট

মহামারির আশংকায় বেশ কয়েকটি দেশ যখন চীন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে তখন উহানে আটকে থাকা নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নেবে না বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। ইমরান খান সরকারের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শনিবার বলেছেন, আমাদের প্রিয়জনদের স্বার্থেই তাদের উহানে থাকতে হচ্ছে। খবর এনডিটিভি

তবে পাকিস্তানের এমন সিদ্ধান্তে হতবাক হয়েছেন দেশটিতে আটকেপড়া পাক নাগরিকরা। ইমরান সরকারের এমন সিদ্ধান্তে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দেশে অবস্থানরত তাদের স্বজনরাও।

universel cardiac hospital

এদিকে বিষয়টিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পাক সরকারের নিন্দা জানিয়েছেন আটকেপড়াদের কেউ কেউ। ভারত, বাংলাদেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার ভিডিও পোস্ট করে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়া লিখেছেন, ইমরান খানের লজ্জা হওয়া উচিত।

বাংলাদেশ, ভারত থেকে ইমরান খানের দায়িত্ববোধ শেখা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।

উল্লেখ্য, গত শনিবার মারাত্মক করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান থেকে চীনে আটকেপড়া ৩১৬ জন বাংলাদেশিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটে ফিরিয়ে আনা হয়। পরদিন সকালে মালদ্বীপের ৭ বাসিন্দাসহ ৩২৩ ভারতীয়কে দেশে ফিরিয়ে আনে মোদি সরকার।

প্রতিবেশি দেশগুলোর এই কার্যক্রম দেখে আশায় বুক বেঁধেছিল উহানে আটকেপড়া পাক নাগরিকরাও। কিন্তু চীনে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত নাঘমানা হাসমি জানিয়ে দেন, তাদের পক্ষে চীনে আটকেপড়া নাগরিকদের পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

অবশ্য এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দেশটির স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক বিশেষ সহকারী জাফর মির্জাও এ সিদ্ধান্তের ব্যাখা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, আমরা মনে করি, উহান শহরে এই মহামারীর বিস্তার থামিয়ে দিয়েছে চীন সরকার। যদি আমরা দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে কাজ করি ও লোকজনকে সেখান থেকে নিয়ে আসি, তখন এই ভাইরাস দাবানলের মতো সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।

জাফর মির্জার এই ব্যাখ্যায় মোটেই সন্তুষ্ট হতে পারছেন না ভুক্তোভোগীরা। উহানে আটকেপড়া পাক নাগরিক মোহাম্মদ রাউফ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আমরা ৪০ জন শিক্ষার্থী উহানে ঘরবন্দি হয়ে আছি। কতোদিন এভাবে চার দেয়ালে আটকে থাকা যায়!

সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে এক পাক শিক্ষার্থী জানায়, পাকিস্তান মিথ্যে বলছে যে তারা সবর্ক্ষণ আমাদের নজরে রাখছে। আমাদের খাবার ফুরিয়ে আসছে। পানিও শেষ প্রায়। এখানে না খেয়েই মারা যাব আমরা। আশঙ্কায় কিভাবে দিন গুনছি তা আমরা ও ।আমাদের পরিবার জানে। দয়া করে আমাদের এখান থেকে নিয়ে যাক ইমরানের ‘নতুন’ পাকিস্তান।

মাস্ক মুখে এসব পাক নাগরিকদের ভিডিও এখন ফেসবুক, টুইটারে ভাইরাল।

তবে চীনে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত নাঘমানা হাসমি বলছেন, করোনাভাইরা মোকাবেলা করার মতো পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই পাকিস্তানে। এ জন্য কোনো রিক্স নিতে চাই না আমরা। চীনের মতো পাকিস্তানে ভাইরাসটির প্রাদূর্ভাব দেখা দিলে তা মহামারী আকার নেবে। তাই আটকেপড়া পাক নাগরিকদের উহানেই থাকতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।

এ বিষয়ে তার যুক্তি, চীনে অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। আক্রান্ত হলে সেখানে তাদের চিকিৎসার জন্য পাকিস্তান সব ব্যবস্থা করবে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তাদের পরিবারের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ দেখছি না আমরা।’

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে