চীনের প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের অন্তত ২৬টি দেশ ও অঞ্চলে। সোমবার একদিনেই সর্বোচ্চ ৬৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে চীনাদের দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে অনেক দেশ। এবার ভারত জানালো, ভিসা আছে এমন চীনা নাগরিকদেরও তারা আর দেশে ঢুকতে দেবে না।
ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভির অনলাইন প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারত সরকার এই মর্মে বিবৃতি জারি করেছে যে, গত ১৫ জানুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত চীনা নাগরিক কিংবা দেশটিতে বসবাসরত বিদেশিদের যেসব ভিসা প্রদান করা হয়েছে তা আর ‘বৈধ’ নয়। গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়াতে শুরু করে।
বিবৃতি অনুযায়ী, নির্দিষ্ট ওই দিনের আগে যেসব চীনা নাগরিক ভারতীয় ভিসা করেছেন তাদের আর ভারতে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। ভারত বলছে, শুধু চীনা নয় চীন থেকে ভারতে আসতে চাচ্ছেন এমন বিদেশি নাগরিকদের কাছে ভিসা থাকলেও তা ‘অবৈধ’ বলে গণ্য হবে।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ ও বিস্তার ঠেকাতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না ভারত। তাই আপাতত চীনাদের জন্য সব রকমের ভিসা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বেইজিংয়ে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস টুইট বার্তায় জানিয়েছে, এটা স্পষ্ট করে জানানো হচ্ছে যে, বিদ্যমান ভিসা আর কোনোভাবেই বৈধ নয়। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে উৎসুক ব্যক্তিরা বেইজিংয়ে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। অথবা সাংহাই ও গুয়াংঝুতে অবস্থিত ভারতীয় কনস্যুলেটে যোগাযোগ করবেন।
টুইট বার্তায় ভারতীয় দূতাবাস আরও জানায়, যারা এখন ভারতে রয়েছেন (নিয়মিত কিংবা ই-ভিসায়) এবং যারা ১৫ জানুয়ারির পর চীন সফর শেষে দেশে ফিরেছেন তাদের সবাইকে ভারত সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নির্ধারিত হটলাইন নম্বর অথবা ইমেইলে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
ভারত এর আগে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় চীনা পর্যটক এবং দেশটিতে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের জন্য অনলাইন ভিসা প্রদান সাময়িকভাবে স্থগিত করে। গত রোববার বেইজিংয়ে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাসের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালা প্রদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী পাওয়া যায়। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত ওই রোগী চীনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাকে কেরালার একটি হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।