‘ভোটের প্রতি মানুষের অনীহা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়’

মত ও পথ প্রতিবেদক

ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

ভোটের রাজনীতির প্রতি মানুষের অনীহা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের এ কথা বলেন।

গত ৩১ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর এটাই তার প্রথম ব্রিফিং। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে সরাসরি সচিবালয়ে এসে ব্রিফিং করেন কাদের। এ সময়ও তার বাম হাতে ক্যানোলা লাগানো ছিল।

universel cardiac hospital

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হলো, দেশের ইতিহাসে এত কম ভোটার কখনও হয়নি। এ বিষয়টি কীভাবে মূল্যায়ন করছেন- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, মূল্যায়ন করার জন্য আমরা ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং করবো। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরে এলে এই মিটিং হবে। সেখানে নির্বাচন নিয়ে বীক্ষণ-পরিবীক্ষণ, আমাদের অবজারবেশন, পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করবো। এ রকমই চিন্তা-ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, নেত্রীর সঙ্গে আমার পরশু দিন ফোনে যখন কথা হয়, তিনি আমাকে বলেছিলেন ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং করা জরুরি।

কাদের বলেন, ইভিএমে এত বড় এলাকায় নতুন অভিজ্ঞতা। এর আগে বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে ইভিএমের ব্যবহার হয়েছে। নতুন অভিজ্ঞতায় প্রায়োগিক বাস্তবতায় কিছু ভুল-ত্রুটিও থাকতে পারে। তবে যারা ভোট দিয়েছেন অনেকেরই প্রতিক্রিয়া হচ্ছে খুব সহজে ভোট দিতে পেরেছেন। এত বড় এলাকায় দু’একটি জায়গায় হয়তো ভুলত্রুটি হয়েছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, এটা ভাবনার বিষয়, আমাদের আওয়ামী লীগের এত জনসমর্থন, সেখানে আরও বেশি ভোট আশা করেছিলাম। আওয়ামী লীগের যে পার্সেন্টেজ সেই তুলনায় তো উপস্থিতি আশানুরূপ নয়। দুই-তিনদিন ছুটি থাকার কারণেও অনেকে চলে গেছেন। পরীক্ষার জন্য অনেকের বাচ্চা-কাচ্চা আছেন দেশে। হয়তো গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। পরিবহন সংকটও কিছুটা দায়ী।

তিনি বলেন, তারপরও আমি মনে করি একটা ভালো নির্বাচন হয়েছে। বর্তমানের ভুলগুলো ভবিষ্যতের ইলেকশনে পুনরাবৃত্তিগুলো এড়ানো যাবে। বিএনপি যে অবস্থায় নির্বাচন করেছে তাদের পার্টির মূল নেতৃত্ব নেই। আমার মনে হয় তারা ভালো করেছে। বিএনপির যে পারফরমেন্স তারা এই ভোটের মধ্যেও তাদের ভোট সংখ্যা একেবারে কম নয়। অনেক ভোট পেয়েছে। সেই দিক থেকে বিরোধী দল হিসেবে তারা ভোটে একেবারে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে এমন নয়। তারা ভালো ভোট পেয়েছেন। এটা গণতন্ত্রের জন্যই ভালো।

একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর বিভিন্ন উপ-নির্বাচনে ভোটাররা সেভাবে আসছে না। আপনি কী মনে করেন না ভোটের প্রতি মানুষের অনীহা বাড়ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, একটা বিষয় হচ্ছে। এই যে ভোটটা হচ্ছে আগেভাগেই শঙ্কা তৈরি করা- এই সিস্টেম খারাপ, এই সিস্টেমে ভোট দেয়া যাবে না। এই রকম অবস্থায় কিছু মানুষের আগ্রহ তো কমতেই পারে। কারণ ভোট সম্পর্কে অপপ্রচারটা অনেক বেশি হয়েছে। সরকারি দলের ভয়ঙ্কর প্রস্তুতি, বিরোধীদলও সতর্ক পাহারায় থাকবে, তারা ঢাকার বাইরে থেকে লোক জড়ো করেছে-এ ধরনের ইনফরমেশনতো ছিলই। আমার মনে হয় সবকিছু মিলিয়ে একটা ভালো ইলেকশন হয়েছে।

তিনি বলেন, এই ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে অভিজ্ঞতার আলোকে আমার মনে হয় ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দলগুলো জনমত সৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। রাজনীতির প্রতি মানুষের আগ্রহ আরও বেশি হওয়া উচিত। ভোটের রাজনীতির প্রতি মানুষের অনীহা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে