দুবাইয়ে বাড়ি কেনার চুক্তি করে তা লঙ্ঘনের ফলে প্রায় ৪২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আদম তমিজি হকের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন এক ব্রিটিশ নাগরিক।
২০১৮ সালের শুরুতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন তমিজি।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ নাগরিক জেরেমি উইলিম্যানের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব এই নোটিশ পাঠান।
নোটিশদাতার দাবি, দুবাইয়ে বাড়ি কিনবেন বলে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর সেই বাড়ির মালিকের কিস্তি পরিশোধ করা পূর্ব পর্যন্ত ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকার অনুমুতির নিয়েছিলেন তমিজি। কিন্তু তিনি ওই বাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি ত্যাগ করেন। পরে বাড়ির মালিক গিয়ে দেখেন তার ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া গেছে। কিন্তু আদম তমিজির কোনো হদিস পাচ্ছেন না তিনি।
নোটিশে বলা হয়, আদম তমিজি হক দুবাইয়ে একটি বিলাসবহুল ভিলা বাড়ি ৬৬.৪ কোটি টাকা দামে কিস্তিতে কেনার জন্য ব্রিটিশ নাগরিক জেরেমি উইলিম্যানের সঙ্গে ২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট চুক্তি করেন। চুক্তিতে উইলম্যানকে ৮৪টি সমান কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। ইতোমধ্যে, বিক্রয়মূল্যের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধের আগেই তমিজি হক ওই বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকার জন্যও চুক্তিবদ্ধ হন।
তবে কিছু কিস্তি দেয়ার পরই আদম তমিজি হক কিস্তি দেয়া বন্ধ করে দেন। চলে যান দুবাই ছেড়ে। পরে উইলিম্যান জানতে পারেন যে, আদম তমিজি হক দুবাইয়ে তার সমস্ত ব্যাংক একাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছেন। উইলিম্যান বাড়িটি সরেজমিনে পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখতে পান যে, তার অনুমোদন বা সম্মতি ছাড়াই ওই বাড়ি থেকে দামি আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক আইটেম এবং ফিটিংস সরিয়ে ফেলাসহ পুরো সম্পত্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। অথচ চুক্তি অনুসারে সমস্ত কিস্তি পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত বাড়ির মালামাল উইলিম্যানের মালিকানায় থাকার কথা ছিল।
নোটিশে আরও বলা হয়, উইলিম্যান আদম তমিজি হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে আদম তমিজি প্রথমে বিভিন্ন ধরনের অজুহাত দেখাতে থাকেন এবং পরবর্তীতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
তাই তমিজি হককে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৪২ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ দিতে নোটিশে বলা হয়েছে।
- ‘যোগান নেই অজুহাতে’ মাস্কের দাম ঠেকলো ১৭৫০ টাকায়
- খালেদার কারাবাস: ডিআরইউতে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে ঐক্যফ্রন্ট
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, বিষয়টি দুবাই পুলিশকে জানান উইলিম্যান। তদন্ত শুরু করে দুবাই পুলিশ। পরে দুবাই পুলিশ তমিজি হককে সে দেশে যাওয়ামাত্র গ্রেফতারের নির্দেশনা জারি করে।
তাই নোটিশ অনুসারে উইলিম্যানকে তার ক্ষতিপূরণ প্রদান না করলে তমিজি হকের বিরুদ্ধে দুবাইয়ের আদালতের পাশাপাশি বাংলাদেশের আদালতে ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।