হাইকোর্ট দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইন ও বিধি মেনে পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রি দিচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিন মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দিয়ে হাইকোর্ট একটি রুলও জারি করেছেন।
আজ মঙ্গলবার পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রির ক্ষেত্রে নকল, জালিয়াতি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
রুলে শিক্ষক, গবেষকদের পিএইচডিতে জালিয়াতি বন্ধ করার জন্য গবেষণা প্রস্তাব চূড়ান্ত করার আগে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে তা যাচাই বা নীরিক্ষার পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। শিক্ষা সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ইউজিসি চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান লিঙ্কন আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
মো. মনিরুজ্জামান লিঙ্কন সাংবাদিকদের বলেন, আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনেও যদি অবৈধ পথ বেছে নিতে হয়, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা কোথায় আছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আদালত বলেছেন, প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত একটি বিশ্ববিদ্যালয় এখন র্যাংকিংয়ে ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পাওয়া যায় না। এটা খুবই দুঃখজনক।
উল্লেখ্য, গত ২১ জানুয়ারি ‘ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮% নকল’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন বলা হয়, ৯৮ শতাংশ হুবহু নকল পিএইচডি থিসিসের মাধ্যমে ২০১৫ সালে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীর।
প্রতিবেদনটি যুক্ত করে গত ২২ জানুয়ারি রিট করেছিলেন আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন। আবেদনে পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভের অনুমোদনের আগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র (এনওসি) নেওয়ার বিধান করার নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে।
এদিকে আবুল কালাম লুৎফুল কবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর ২৮ জুনয়ারি ঢাবি উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ছিলেন।
পরে ঢাবির জনসংযোগ দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলা হয় শিক্ষক আবুল কালাম লুৎফুর কবীরকে অব্যাহতির পাশাপাশি অভিযোগটি তদন্তে একটি কমিটিও করা হয়েছে। ওই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ৬০ দিনের মধ্যে দিতে ঢাবি উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।