ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের সফরে আজ মঙ্গলবার সকালে রোমের উদ্দেশে রওনা হবেন। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট ইতালির রাজধানী রোমের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে।
বিমানটি স্থানীয় সময় বিকাল সোয়া ৪টায় রোমের ফিয়ামিসিনো বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। মিনিস্টার প্লেনিপোটেনসিয়ারি অব ইটালিয়ান ফরেন মিনিস্ট্রি এবং ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাবেন।
বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে মোটর শোভাযাত্রাসহকারে প্রধানমন্ত্রীকে পার্কো দেই প্রিন্সিপি গ্র্যান্ড হোটেল অ্যান্ড স্পায় নিয়ে যাওয়া হবে। ইতালির রাজধানীতে সফরকালে তিনি সেখানে অবস্থান করবেন।
শেখ হাসিনা একই দিন সন্ধ্যায় তার সম্মানে একটি সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।
৫ ফেব্রুয়ারি সকালে তিনি রোমের ‘ভায়া ডেল’ এন্টারটাইড এলাকায় বাংলাদেশ দূতাবাসের চ্যান্সরি ভবন উদ্বোধন করবেন। বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন পালাজো চিগিতে আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন। দুই নেতা সম্মেলনে দ্বিপক্ষীয় সার্বিক ইস্যুগুলোর পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
পরে ইতালীয় ব্যবসায়িক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা পার্কো দেই প্রিন্সিপি গ্র্যান্ড হোটেল অ্যান্ড স্পায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। প্রধানমন্ত্রী পরে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন। ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে শেখ হাসিনা পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে রোম থেকে ইতালির মিলান শহরের উদ্দেশে যাত্রা করবেন এবং স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় সেখানে পৌঁছবেন।
প্রধানমন্ত্রী ৭ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে আমিরাত এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে মিলান মালপেন্সা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন। ৮ ফেব্রুয়ারি দুবাই হয়ে বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবেন।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকালে ঢাকা ও রোমের মধ্যে তিনটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে। রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ইতালির হাতে তিনটি খসড়া চুক্তি রয়েছে।
তারা যদি প্রধানমন্ত্রীর সফরকালের মধ্যে এগুলো চূড়ান্ত করতে পারে, তবে এ সফরকালে চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হবে। মোমেন আরও বলেন, প্রস্তাবিত চুক্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক বিনিময়, রাজনৈতিক আলোচনা এবং কূটনৈতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা।
পরপর তিনবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ইউরোপের কোনো দেশে শেখ হাসিনার এটাই প্রথম সফর উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, তার এই সফর বাংলাদেশের অর্থনীতি ও এর চলমান উন্নয়নের জন্য লাভজনক হবে।
- মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন : শুরু হলো ট্রাম্পকে হারানোর লড়াই
- করোনা ভাইরাস ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা
তিনি আরও বলেন, আমরা সফরটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করছি। কারণ এ সফরে বাংলাদেশে ইতালীয় উদ্যোক্তাদের নতুন বিনিয়োগের সন্ধান, ইতালিতে আরও বিভিন্ন পণ্য রফতানি এবং দক্ষ জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্র অনুসন্ধান করার প্রয়াস চালানো হবে।
উল্লেখ্য, ইতালি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার। দেশটিতে দুই লাখের বেশি বাংলাদেশি বসবাস করেন।