অমর একুশে গ্রন্থমেলার ষষ্ঠ দিনের সকালটা দখল করে নিয়েছে শিশুরা। ‘শিশু প্রহর’ উপলক্ষে শুক্রবার সকালে মেলার শুরু থেকেই অভিভাবকদের সঙ্গে এসে মেলায় ভিড় জমিয়েছে শিশুরা। তারা এক স্টল থেকে অন্য স্টলে ঘুরছেন আর চোখ বুলাচ্ছেন মজার সব বইয়ের পাতায়। এর মধ্য দিয়ে এবারের মেলা অনেকটা তার চিরচেনা রূপে ফিরে এসেছে বলে জানান মেলা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বইমেলার ষষ্ঠ দিন সকাল থেকে টিএসসি হয়ে অভিভাবকদের হাত ধরে মেলা প্রাঙ্গণে আসে শিশুরা। নানা বয়সী শিশুরা বাবা-মায়ের হাত ধরে ঘুরে দেখছে মেলা। শিশু কর্নারের বিভিন্ন স্টলে গিয়ে দেখছে নিজেদের পছন্দের বই। কিনছে নিজেদের পছন্দনীয় বিভিন্ন শিশুতোষ বই।
বাংলা একাডেমি চত্বরে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় চলছে শিশু প্রহর। শিশুদের মানসিক বিকাশ ও সর্বক্ষেত্রে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাঙালির প্রাণের মেলা ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’য় এমন আয়োজন করে বাংলা একাডেমি। বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া ‘শিশু প্রহর’ চলবে বেলা একটা পর্যন্ত।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, শিশুপ্রহরে শিশুরা পরিবারের সদস্যের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং তাদের পছন্দের বই খুঁজে নিচ্ছেন। ছোট্ট ছোট্ট শিশুরা অভিভাবকদের সঙ্গে বই কিনছেন, কিনছেন কার্টুনও।
মেলায় সিসিমপুর, শিশু একাডেমি, ছোট মেলা, পাতা বাহার, রঙিন ফুল-এর স্টলে শিশুদের ভিড় সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে।
শিশু সাহিত্য বাংলা সাহিত্যের অন্যতম অংশ। আর শিশুদের নিয়ে নানা বইয়ের আয়োজন দেখা গেলে মেলার নানা স্টলে। রয়েছে শিশু-কিশোরদের সায়েন্স ফিকশন, ভূতের গল্প, কৌতুক এবং ছড়াসহ নানা ধরনের বই। শিশু চত্বরের স্টলগুলোতে দেখা গেছে কচিকাঁচাদের উপচেপড়া ভিড়।
মেলায় রয়েছে শিশুদের জন্য বিনোদন কেন্দ্রও। মেলার শিশু চত্বরে প্রবেশ করলেই মনে হবে এ যেন কোনো শিশুরাজ্য। যেখানে শিশু-কিশোরদের রাজত্ব।
মিরপুর থেকে মায়ের সঙ্গে মেলায় এসেছেন মায়িশা আতিয়া। মেয়ের এক স্টল থেকে অন্য স্টলে ছুটে যাওয়ায় তাকে ধরে রাখতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছিল শামসুন্নাহার হাসনাকে। তিনি জানান, সকাল সকাল মেয়েকে নিয়ে এসেছে। মেয়ে শুধু বই কিনতে চায়।
মায়ের সঙ্গে উত্তরা থেকে এসেছেন আবেদীন। মা ছেলেকে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের বই কিনে দিতে চাইলেও আবেদীনের আগ্রহ ভূতের গল্প বা কার্টুনে।
মায়িশা ও আবেদীনের মতো শিশুদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে পুরো বইমেলা প্রাঙ্গণ।
এবারের প্রথম শিশুপ্রহরের জন্য শিশু চত্বর সাজানো হয়েছে আরও রঙিনভাবে। আছে খেলা আর নির্মল বিনোদন নেয়ার সুযোগ। পরিধির পরিসর দেখাচ্ছে আরও সুন্দর। প্রতিটি স্টলেই রয়েছে নান্দনিকতার ছোঁয়া। শিশু-কিশোরদের উপযোগী করে তোলা হয়েছে পুরো শিশুচত্বর।
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটায় শুরু হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। আর এর উদ্বোধন করেন শিশুদের শিল্পী রফিকুন্নবী। সোহরাওয়ার্দীর বর্ধিত অংশে এবারের প্রথম শিশুপ্রহর বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত। এরপর বরাবরের মতো বেলা তিনটা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে বইমেলা।