করোনা ভাইরাস : প্রতিরোধে সতর্ক বাংলাদেশ

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

করোনাভাইরাস
ফাইল ছবি

চীনে সম্প্রতি নতুন এক প্রাণঘাতী ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এ ভাইরাসের নাম দিয়েছেন ‘2019 novel coronavirus (2019-nCoV)’। সংক্ষিপ্ত নাম করোনা ভাইরাস। এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় চীনে আরও ৬৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এসব মৃত্যুর মধ্যে শুধু চীনের হুবেই প্রদেশেই মারা গেছেন ৬১৮ জন। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৬৩০ ছাড়িয়ে গেছে। মৃত্যুর মিছিলে এই সংখ্যা যোগ হওয়ার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যাও। গতকাল এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজারের বেশি।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি হয়তো মানুষের দেহকোষের ভেতরে ইতিমধ্যেই ‘মিউটেট করছে’ অর্থাৎ গঠন পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিচ্ছে এবং সংখ্যাবৃদ্ধি করছে – যার ফলে এটি আরো বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। করোনা ভাইরাসের উপসর্গগুলো জেনে নিয়ে সকলের সাবধান থাকা দরকার। যেহেতু রোগটি সংক্রমিত হয়, তাই সবারই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

universel cardiac hospital

এই ভাইরাসটি যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ইতিমধ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বিমানবন্দরে নেওয়া হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। এরই মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীন ভ্রমণ শেষে আসা দেশি-বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। রোগ শনাক্তে চালু করা হয়েছে থার্মাল স্ক্যানার। পাশাপাশি বিশেষ মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।

যতটুকু জানা গেছে, এটি এনিমেল সোর্স থেকেই আসছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একজন মানুষ থেকে আরেকজন মানুষের শরীরে এখনও এই রোগ ছড়াচ্ছে না। সেটা হলে আসলে আমাদের চিন্তার কারণ অনেক বেড়ে যেত। তবে কোন এনিমেল এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে চীন এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি।

যেহেতু রোগটি সংক্রমিত হয়, তাই সবারই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। বিশেষ করে, হাঁচি-কাশির সময় রুমাল-টিস্যু-গামছা দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নেওিয়া। হাঁচি-কাশিরত ব্যক্তি থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করা। প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করা। বারবার দুই হাত সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা। সবধরনের ফলমূল ভালো করে ধুয়ে খাওয়া।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০০২-০৩ এর দিকে চীন থেকে উদ্ভূত সার্স ভাইরাসের প্রকোপে বিশ্বজুড়ে সাতশর বেশি মানুষ মারা যায়। সে সময় ২৬টি দেশের প্রায় ৮ হাজার লোক প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

খুব শিগগির বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে করোনা ভাইরাস নির্মূলে নতুন ভ্যাকসিন আবিষ্কার সম্ভব হবে- এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে