র্যাব ডিজি বেনজীর আহমেদ বলেছেন, দেশে ৮০ লাখ মাদকসেবী রয়েছে আর তারা প্রতিদিন প্রায় ২৫০ কোটি টাকা মাদকের পেছনে খচর করে। মাদকের পথ থেকে তাদের ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, না হলে পোকা-মাকড়ের মতো খুঁজে খুঁজে তাদের নিশ্চিহ্ন করা হবে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়া আজিজুল হক কলেজে (পুরাতন ভবন) র্যাব-১২ আয়োজিত মাদকবিরোধী সাইকেল র্যালি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে র্যাব ডিজি এসব কথা বলেন।
বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নের বড় বাধা মাদক ব্যবসা। দেশে প্রতিদিন আড়াইশ কোটি টাকা মাদক সেবনে অপচয় হয়। মাদকমুক্ত দেশ গড়তে পারলে উন্নয়নের ধারা আরও বেগবান হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা অল্প সময়ের মধ্যে মধ্যম আয়ের তালিকায় নাম লেখাবে।
র্যাব ডিজি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তোমাদের পরিচিত কেউ যদি মাদকাসক্ত থাকে তবে তাকে মাদক ছাড়াতে তার চিকিৎসা এবং কাউন্সিলিং করতে হবে। আমাদের মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। সেই যুদ্ধে জয়ী হতে হবে। এসো আমরা এই মাদক নামক দানবকে সোনার বাংলা থেকে নিশ্চিহ্ন করি, বিলুপ্ত করি। আমাদের অবশ্যই মাদক নামক ফ্রাঙ্কেনস্টাইনকে পরাজিত করতে হবে। মাদকাসক্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যারা মাদকাসক্ত তারা চিকিৎসা নিন, মাদকের পথ থেকে ফিরে আসুন। সুস্থ জীবন যাপন করুন। সমাজের মূলধারায় ফিরে আসুন।
এ সময় তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, যারা মাদকের ব্যবসা করে তারা গণশত্রু। বাংলাদেশে আপনাদের স্থান হবে না। এমন কোনো শক্তিধর আপনারা হননি যে আপনারা টিকে থাকবেন। ১৮ কোটি মানুষ আপনাদের একটা একটা করে খুঁজে বের করে দেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করবে। আমাদের আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করার ক্ষমতা আপনাদের কেউ দেয়নি। আমরা দেশবাসী মিলে এই গণশত্রুদের সমাজ থেকে পোকামাকড়ের মতো খুঁজে খুঁজে নিশ্চিহ্ন করবো।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে র্যাব ডিজি আরও বলেন, আজ থেকে চার দশক আগে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তোমাদের কোনো ধারণাই নেই সেই সময় বাংলাদেশ কেমন ছিল। আমরা যখন পাকিস্তানের অংশ ছিলাম তখন এই জনপদের মানুষের অবস্থা কেমন ছিল তোমরা ধারণাই করতে পারবে না। এই অঞ্চলে ছিল অভাব, এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে ছিল দারিদ্র্য, ছিল অশিক্ষা এবং অন্ধকার। সেখান থেকে বাংলাদেশ আজ কোথায় এসেছে? হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আজকে আমাদের বাংলাদেশ যেভাবে আছে, সেটা আমরা অর্জন করতে পারতাম না। বাংলাদেশ আজকে পৃথিবীর মানচিত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অন্যতম প্রাগ্রসর জাতি।
মাদকবিরোধী সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ শাজাহান আলী, র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি একেএম হাফিজ আকতার, বগুড়ার জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহামেদ, বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা, র্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম।
সাইকেল র্যালিতে বগুড়া শহরের ১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৮শ ছাত্র-ছাত্রী অংশ গ্রহণ করে। র্যালিটি আজিজুল হক কলেজ পুরাতন ভবন থেকে শুরু হয়ে শিববাটি, কালিতলা, দত্তবাড়ি, বড়গোলা, থানার মোড়, সাতমাথা হয়ে সেন্ট্রাল স্কুল মাঠে শেষ হয়।