‘মানবিক দিকটা চিন্তা করে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি’

মত ও পথ প্রতিবেদক

সেলিমা ইসলাম
সেলিমা ইসলাম

খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম জানিয়েছেন, আজকে তার (খালেদা জিয়ার) শরীর খুবই খারাপ ছিল। সে শ্বাসকষ্টে ভুগছে। একদম কথাই বলতে পারছেন না। বাঁ হাতটা সম্পূর্ণভাবে বেঁকে গেছে। এখন ডান হাতটাও বেঁকে যাচ্ছে। খেতে পারছেন না, খেলেই বমি হয়ে যাচ্ছে। গায়ে জ্বর ও প্রচণ্ড ব্যথা। গায়ে হাত দেয়া যাচ্ছে না। হাত দিলেই সে চিৎকার করছে। এই অবস্থায় মানবিক দিকটা চিন্তা করে ওনার মুক্তি দাবি করছি আমরা।

আজ মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সেলিমা ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিছানা থেকে বাথরুম দুই-তিন হাত জায়গা হবে, তাতেও যেতে ২০ মিনিট সময় লাগে। এখানে যেই চিকিৎসা হচ্ছে- তাতে তার শারীরিক কোনো উন্নতি হচ্ছে না। আজকেও ফাস্টিং সুগার ১৪-১৫ ছিল।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে, তিনি উঠে দাঁড়াতে পারেন না। হাঁটতেও পারেন না। একটু হাঁটলে আবার তাকে বিশ্রাম নিতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় সরকারের কাছে আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।

সেলিমা ইসলাম বলেন, আজকে দুই বছর যাবৎ খালেদা জিয়া কারান্তরীণ আছেন। যখন তিনি কারাগারে গিয়েছেন, তখন তার শারীরিক যে অবস্থা ছিল এখন তা নেই। তখন সে হেঁটে চলে বেড়াত, এখন সে ৫ মিনিটও দাঁড়াতে পারে না।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা খুবই প্রয়োজন। তার শরীর এতই খারাপ যে এই মুহূর্তে যদি উন্নত চিকিৎসা দেয়া না হয় তাহলে কী হবে সেটা বলতে পারছি না। আমাদের একটা আবেদন শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে ও মানবিক দিকটা চিন্তা করে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়া হোক।

এক প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়ার বোন বলেন, তার মুক্তির জন্য আমরা এখনও আবেদন করিনি। আমরা জাতির কাছে আবেদন করছি, জনতার কাছে আবেদন করছি যে, ওনার জন্য দোয়া করবেন।

এর আগে বিকাল সোয়া ৩টার দিকে বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পরিবারের পাঁচ সদস্য। সেখানে তারা প্রায় দেড় ঘণ্টা অবস্থান করেন। এ সময় ছিলেন- খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দারে স্ত্রী কানিজ ফাতেমা ও ছেলে অভিক ইস্কান্দার, তারেক রহমনের স্ত্রী জোবায়দা রহমানের বোন শাহিনা জামান খান ও আরাফাত রহমান কোকোর শাশুড়ি ফাতেমা রেজা।

জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে বন্দি আছেন খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দণ্ডিত হওয়ার পর তাকে নেয়া হয়েছিল পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে। কয়েক দফায় সেখান থেকে এনে তাকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। সর্বশেষ গত বছর ১ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে