সরকার জেলের মধ্যে খালেদা জিয়াকে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলতে চায় বলে বিএনপি যে অভিযোগ করে আসছে তার জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সে ধরনের ইচ্ছা শেখ হাসিনার নেই। আমরা এই প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না। বেগম জিয়াকে জেলের মধ্যে মেরে ফেলবো এ রাজনীতি বঙ্গবন্ধু করে নাই, শেখ হাসিনাও করে না।
বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে তার দলের লোকেরা বলে একটা আর চিকিৎসকেরা বলেন আরেকটা। চিকিৎসকেরা বলেন তার স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে আছে। তার দলের লোকেরা তাকে অসুস্থ থেকে অসুস্থ বানিয়ে যতটা না চিকিৎসার জন্য ভাবছে তার চেয়ে বেশি রাজনীতি করছে।
খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাকে (খালেদা) প্যারোলে মুক্তি দেয়ার জন্য পরিবার থেকে বিভিন্নভাবে আবেদন করা হয়েছে। যারা এ আবেদন করেন, টেলিভিশনের পর্দায় আবেদন করেন। আমি সকালেও খবর নিয়েছি, তারা লিখিতভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্যারোলের মুক্তির জন্য আবেদন করেননি।
তিনি বলেন, এখন লিখিত আবেদন করলেও এই আবেদন কারণসহ যুক্তিসঙ্গত হতে হবে। যুক্তিযুক্ত কারণ ছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্যারোল বিবেচনা করতে পারেন না, সরকারও বিবেচনা করতে পারে না।
খালেদা জিয়াকে আওয়ামী লীগ জেলে নেয়নি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাকে কি আওয়ামী লীগ জেলে নিয়েছে? তাকে কি শেখ হাসিনা জেলে নিয়েছেন? তাকে জেলে নিয়েছে আদালত।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মামলায় তিনি বিচারাধীন আছেন। তার মামলাটি রাজনৈতিক মামলা নয়, দূর্নীতির মামলা। রাজনৈতিক মামলা হলে সরকার তার মুক্তি নিয়ে বিবেচনা করতে পারতো। কিন্তু দূর্নীতি মামলায় তাকে মুক্তি দেয়ার একমাত্র এখতিয়ার রয়েছে আদালতের।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আজকের ছেলে মেয়েরা শিক্ষিত হলে, বড় হলে, প্রধানমন্ত্রী হলে টাকার পাহাড় বানায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে বাংলাদেশে আইসিটি বিপ্লব করেছে, কোনও হাওয়া ভবন বানায়নি। বাংলাদেশকে ডিজিটাল করেছে।
টুঙ্গিপাড়ায় প্রত্যেক পরিবারের একজন যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা আওয়ামী লীগ নেত্রীর অঙ্গীকার জানিয়ে তিনি বলেন, ধৈয্য ধরুন, বেকার যুবকেরা তোমাদের চাকরীর ব্যবস্থা হবে। টুঙ্গিপাড়ার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে, গ্যাসও আসবে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদের সামনে হ্যালিপ্যাড চত্বরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, এস এম কামাল হোসেন, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, পৌর মেয়র শেখ আহম্মেদ হোসেন মির্জা, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার খায়ের প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে দুপুর পৌনে ১২টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন সরদার।
দ্বিতীয় অধিবেশনে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার খায়েরকে সভাপতি ও মো. বাবুল শেখকে সাধারন সম্পাদক করে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং শেখ সাইফুল ইসলামকে সভাপতি ও ফোরকান বিশ্বাসকে সাধারন সম্পাদক করে পৌর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।