বসন্তপ্রেমীদের আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। চারিদিকে হলুদের ছড়াছড়ি। যেনো মেলা বসেছে। তরুণ-তরুণীদের দেখা যাচ্ছে হলুদ, কমলা ও বাসন্তী রঙের পোশাক পরে বসন্তকে বরণ করে নিতে।
আজ পয়লা ফাল্গুন। তাই ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নিয়ে তার উদযাপন চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায়। শুক্রবার সকালে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনে চারুকলায় বকুলতলায় বসন্ত উৎসবের উদ্বোধনী পর্ব শুরু হয় ধ্রুপদী সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।
সুরের মূর্ছনার আবেশ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো বকুলতলায়। একে একে পরিবেশন করা হয় গান, আবৃত্তি এবং নৃত্য। নানা বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে চারুকলা প্রাঙ্গণ। এক অন্যরকম আবেশে ভরে ওঠে স্নিগ্ধ সকালটি। সেই আবেশ শুধু চারুকলা এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। ছড়িয়ে পড়েছে শাহবাগ থেকে শুরু করে পুরো ক্যাম্পাস এলাকায়।
ক্যাম্পাস জুড়েই লেগেছে হলুদ রঙয়ের ছোঁয়া। নারী-পুরুষ উভয়েই হলুদ রংয়ের পোশাকে নিজেদের সাজিয়েছেন। নারীরা নিজেদের বসন্তের সাজে সাজাতে খোঁপায়-গলায়-মাথায় পরেছেন গাঁদা ফুলের মালা। হাতে রেশমি চুড়ি আর পরনে বাসন্তি রংয়ের শাড়ি। বসন্ত উপলক্ষ্যে পুরুষদের পরনেও শোভা পাচ্ছে রঙিন পাঞ্জাবি বা ফতুয়া। সব মিলিয়ে প্রকৃতি আর মানুষ বসন্তের আমেজে মিলেমিশে একাকার। কেউ এসেছেন দলবেঁধে, কেউ জুটিবদ্ধ আবার কেউ একা।
বসন্ত বরণ উৎসবে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জরিনা মিমি বলেন, শীতের সময় আমরা কেমন যেনো জবুথবু হয়ে পড়ি। এক ধরনের আলসেমী ভর করে মানুষ থেকে শুরু করে জীবকূল ও প্রকৃতিতেও। বসন্তের আগমনে সেই জড়তা কেটে যায়। বসন্তের রং আমাদের যেনো নতুন করে উজ্জীবিত করে তোলে।
বাবার কাঁধে-কোলে চড়ে বসন্ত বরণে এসেছে সাড়ে ৩ বছরের ছোট্ট শিশুটিও। সন্তান কোলে নিয়ে আসা সাইফুল সজিব বলেন, সত্যিকার অর্থে কর্মব্যস্ততায় আমাদের বের হওয়া হয়ে ওঠে না। সুযোগ পেলেই মিস করি না। বসন্ত বাঙালির প্রাণের উৎসব। আমার বাচ্চা যেন বাঙালির এই উৎসব সম্পর্কে জানতে পারে সেজন্যই তাকে সঙ্গে নিয়ে বসন্ত উৎসবে এসেছি।
- ছুটির দিনে গ্রন্থমেলায় প্রবেশে দীর্ঘ লাইন, আনন্দে মেতেছে শিশুরা
- খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে কাদের-ফখরুল ফোনালাপ
চারুকলার বকুলতলায় বসন্ত উদযাপন আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট মত ও পথকে জানান, গত ২৫ বছর ধরে এ আয়োজন হয়ে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়েছে। অনুষ্ঠান চলবে সকাল ১১টা পর্যন্ত। বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলার আয়োজন।
এছাড়া ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এবং বিকাল ৪ টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলবে।
অনুষ্ঠানমালায় একক সঙ্গীত পরিবেশন, দলীয় নৃত্য পরিবেশন, একক আবৃত্তি ও দলীয় সঙ্গীতের আয়োজন রয়েছে বলে জানান তিনি।