সরকারি চাকরিতে ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডে (আগের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী) নতুন কোন পদ্ধতিতে নিয়োগ দেয়া হবে, এ বিষয়ে সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) দেয়া প্রস্তাব যাচাইয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ কমিটি গঠন করে আদেশ জারি করা হয়েছে। পিএসসি নাকি অন্য কোনো সংস্থা গঠন করে ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডে নিয়োগ দেয়া হবে সে বিষয়ে সুপারিশ করবে এ কমিটি।
আট সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটির আহ্বায়ক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব। কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, অর্থ বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগ, সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের যুগ্মসচিব পর্যায়ের একজন করে কর্মকর্তা এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা) ও যুগ্মসচিব (বিধি-১)।
জনপ্রশাসনের উপসচিবকে (বিধি-১) সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটি প্রয়োজনে যে কোনো সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। কমিটিকে আগামী তিন মাসের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
প্রশাসনে প্রায় সব সময়ই আড়াই থেকে তিন লাখের মতো তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ খালি থাকে। মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলো এ পদে কর্মী নিয়োগ দেয়। এসব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে পছন্দের লোক নিয়োগ, অর্থের বিনিময়ে নিয়োগসহ প্রায়ই নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এ প্রেক্ষাপটে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়টি সামনে আসে। কিংবা প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মতো তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগ পিএসসির মাধ্যমে দেয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে।
তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি পদ্ধতি নির্ধারণে পিএসসিকে প্রস্তাব দিতে বলা হয়। কিছুদিন আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সেই প্রস্তাব জমা দেয় পিএসসি।
এর আগে পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক বলেন, এটা করতে (তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগের নতুন পদ্ধতি) হলে কী কী করতে হবে, সে বিষয়ে ওয়ার্কআউট করে তা আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। জনপ্রশাসন সেটি যাচাই-বাছাই করে পরে আমাদের জানাবে।
পর্যালোচনা কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে বলা হয়, বেতন গ্রেড ১৩ থেকে ২০তম পর্যন্ত পদে সরকারি কর্মচারী নিয়োগের কর্তৃপক্ষ ও পদ্ধতি নির্ধারণ। বেষ্টনি (আমব্রেলা) নিয়োগবিধি প্রণয়নের আইনগত ও প্রয়োগিক বিষয়সমূহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা। বছরভিত্তিতে একটি সমন্বিত পরীক্ষা গ্রহণ করে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের লক্ষ্যে পদভিত্তিক একটি পুল গঠনের বিষয়টির প্রায়োগিক সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই।
বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের অফিসের ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারী নিয়োগ কার্যক্রম কমিশনের আওতাভুক্ত করা হলে কোন সমস্যার সৃষ্টি হবে কি না- তা সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্যও বলা হয়েছে কমিটিকে।
- ‘সোনার বাংলা’ থেকে শিখুন: ভারতীয় কলামিস্ট স্বাতি নারায়ণ
- চীন ও সিঙ্গাপুরফেরত মানেই করোনায় আক্রান্ত নয়: আইইডিসিআর
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (বিধি-১) আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, কোন পদ্ধতিতে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে নিয়োগ দেয়া যায় সেই বিষয়ে পিএসসি একটা প্রস্তাব দিয়েছে। সেটি যাচাই-বছাইয়ের জন্য কমিটি করা হয়েছে। পিএসসি লোকবল নিয়োগ, বিভিন্ন বিধি-বিধান পরিবর্তনসহ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের প্রস্তাবের অনেক কিছুই স্পষ্ট নয়।
তিনি বলেন, কমিটি বসে পিএসসির প্রস্তাবসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করবে। কমিটি সুপারিশ করার পরই বোঝা যাবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ পিএসসির মাধ্যমে করা হবে নাকি এনটিআরসিএ’র মতো কোন সংস্থা গঠনের মাধ্যমে করা হবে। কমিটির প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করা হবে।