কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য খুলে যাওয়া কাতারের শ্রমবাজারে দক্ষ জনশক্তি নিতে আগ্রহ প্রকাশ দেশটি। একইসঙ্গে দেশটি বাংলাদেশের সঙ্গে চার সমঝোতা চুক্তিতে একমত হয়েছে। আগামী তিন মাসে দুই দেশের মধ্যে এসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।
আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় ঢাকায় সফররত কাতারের প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল-মুরাইখির সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রায় দুই ঘণ্টার মতো সময় আলোচনা করেছি। কাতার আমাদের দেশ থেকে দক্ষকর্মী নিতে চায়। কাতারে যেসব বাংলাদেশি আছে তাদের নিয়ে কথা হয়েছে। তাছাড়া আরও নতুন কী কী ক্ষেত্রে আমাদের এখান থেকে মানুষ পাঠাতে পারি এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ফিফা বিশ্বকাপ-২০২২ উপলক্ষে সেখানে তাদের নতুন করে শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে। আমরা সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি।
কাতার ডেভেলপমেন্ট অথরিটির সঙ্গে মিলে কীভাবে সেখানে কাজ করা যায় বৈঠকে সে বিষয়েও বিস্তারিত আলাপ হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় অঞ্চলে কাতার বাংলাদেশের অন্যতম বড় একটি শ্রমবাজার। ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য দেশটির শ্রমবাজার সঙ্কুচিত হতে থাকে। আর সেই সঙ্কুচিত বাজার গত কয়েক মাস থেকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছিল, কাতারে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে বিপুল কর্মীর চাহিদা কমে যেতে থাকে। আর এই প্রেক্ষাপটেই বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেশটি।
আজকের বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে কাতার চার সমঝোতা চুক্তিতে একমত হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কূটনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তারা যেন কাতারে গিয়ে ভিসা ফ্রি এন্ট্রি পায় চুক্তিটির কাজ শেষের দিকে বলেও জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে চারটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরে আমরা একমত হয়েছি। আমাদের দেশ থেকে কূটনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তারা যেন সেখানে ভিসা ফ্রি এন্ট্রি পায়, সেখানে আমাদের কোনো নাগরিক কোনো অপরাধ করলে সাজা শেষে যেন দেশে আসতে পারে, দ্বৈত কর যেন নাগরিকেরা এড়াতে পারেন এবং নির্বাচনে সহযোগিতা করার মতো বিষয়গুলোতে আমরা কাজ শেষ করে এনেছি।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, আমাদের এখানে তারা এসেছেন। ব্যবসা বাণিজ্য, কর্মী পাঠানো ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন মাত্রা দেখছি আমরা।
আগামী দিনে উভয় দেশের উচ্চপর্যায়ের সফর আয়োজিত হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন প্রতিমন্ত্রী।