জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবারও আবেদন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। জামিন আবেদনে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন এ আবেদন করেন।
পরে সগীর হোসেন লিয়ন বলেন, উন্নত চিকিৎসা নিতে লন্ডন যাওয়ার যুক্তি দেখিয়ে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামিন চেয়ে আবারো হাইকোর্টে আবেদন করেছেন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদা জিয়ার পক্ষে করা জামিন আবেদনে যুক্তিতে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ এবং তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তার উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে না। তাই জামিন পেলে তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাবেন।
তবে এর আগেও চ্যারিটেবল মামলায় ২০১৯ সালের ৩১ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করেছিলেন। এরপর তারা আপিল করেন। ওই আপিলও খারিজ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এরপর ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর হাইকোর্টের খারিজাদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করেন তার আইনজীবীরা। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ১৪’শ ১ পৃষ্ঠার ওই আপিল আবেদন দাখিল করা হয়। ওই আপিলের শুনানি নিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন চেয়ে আদেশ দেন আপিল আদালত। তবে, শুনানি শেষে খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর করেননি আপিল বিভাগ।
এর আগে ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, অর্থদণ্ড স্থগিত এবং সম্পত্তি জব্দের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়ে দুই মাসের মধ্যে ওই মামলার নথি তলব করেছিলেন।
এরপর ২০ জুন বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। গত বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করা হয়।
২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্যের কাছে আবেদন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। গত ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বজনদের পক্ষ থেকে এ আবেদন করেন।
এদিকে খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে সরকারকে ‘নমনীয়’ হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ফোন করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওবায়দুল কাদের নিজেই সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন।
যদিও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন তারা খালেদা জিয়ার জামিন চাইলেও প্যারোল নিয়ে কোনো কথা বলেননি।
এরমধ্যেই জামিন চেয়ে ফের উচ্চ আদালতে আবেদন করলেন কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।