আজ মঙ্গলবার ঘোষণা হয়েছে সিঙ্গাপুরের বাজেট। চীন থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটি এবারের বাজেটে বরাদ্দ রেখেছে ৪৬০ কোটি মার্কিন ডলার। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী পণ্য সরবরাহ ও পর্যটন শিল্পকে ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত করেছে।
হংকংভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিঙ্গাপুর এবারের বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা খাতে বরাদ্দ করেছে ৮০০ মিলিয়ন সিঙ্গাপুরি ডলার। এছাড়া ব্যবসায় ও শ্রমিকদের জন্য ৪ বিলিয়নের সঙ্গে নিম্ন আয়ের নাগরিকদের জন্য সরকারি তহবিল থেকে ১৬০ কোটি সিঙ্গাপুরি ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
পার্লামেন্টে দুই ঘণ্টাব্যাপী দেয়া বাজেট বক্তৃতায় দেশটির অর্থমন্ত্রী সোয়ে কিট বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ঠিক তখনই মহামারি করোনাভাইরাস আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করলো। এই মহামারি আমাদের অর্থনীতিতে বিরুপ প্রভাব ফেলেছে। আমাদের প্রধান উদ্বেগের বিষয় হলো, আপনি এবং আপনার পরিবারকে সুরক্ষা দেয়া।
গত মাসে দেশটিতে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ার আগ পর্যন্ত চলতি বছরে আসন্ন সাধারণ নির্বাচন হওয়ার ইঙ্গিত আসতে শুরু করে। তাতে সিঙ্গাপুরের ২০২০ সালের বাজেটে মানুষের ভোগবিলাসের নানা চাহিদা পূর্ণ হবে কিনা সেদিকেই নজর ছিল সবার, যদিও আগামী বছরের এপ্রিলে দেশটির সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের কথা রয়েছে।
বেশিরভাগে বিশ্লেষক বলছেন, তারা ধারণা করেছিলেন এবারের বাজেটেও মানুষের ভোগবিলাসি চাহিদা পূরণে বরাদ্দ রাখা হয়েছে—যেমন স্বাস্থ্যসেবা খাতে আরও বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে এবং এককালীন নগদ অর্থ দেয়া হচ্ছে কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অর্থনীতিতে যে বিরুপ প্রভাব পড়েছে তা মোকবিলায় এই বাজেটের মনযোগ বেশি।
করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে সংকটে পড়েছে সিঙ্গাপুরও। ইতোমধ্যে ধস নেমেছে দেশটির পর্যটন খাতে। ভাইরাস আতঙ্কে বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। এই সংকট কাটিয়ে অর্থনীতিকে ফের চাঙা করতে আগামী বাজেটে বড় প্রণোদনা রাখতে যাচ্ছে এমন ইঙ্গিত আগেই দিয়েছেল দেশটির সরকার।
- কানেকটিভিটি বাড়াতে টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত ঢাকা-কাঠমান্ডুর
- গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানায় ৬০ দিনের মধ্যে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের…
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, করোনা সংক্রমণ এড়াতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় প্রতিদিন গতে অন্তত ২০ হাজারেরও বেশি পর্যটক হারাচ্ছে সিঙ্গাপুর। এবারের অর্থনৈতিক ক্ষতি সার্স মহামারিকেও ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে সিঙ্গাপুরের এ বছরের জিডিপি ০.৫ শতাংশ থেকে এক শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে।
এদিকে করোনাভাইরাসে নতুন করে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে চীনে। আক্রান্ত হয়েছেন আরও ১৮০৭ জন। চীনের বাইরে ৫ সহ সবমিলিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ৮৭৩ এবং আক্রান্ত ৭৩ হাজার ৪২৮ জন। সিঙ্গাপুরে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন ৮১ জন, এরমধ্যে পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিকও রয়েছেন।