টানা হারের বৃত্ত থেকে বের হয়ে জয়ে ফেরার লক্ষ্য নিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে আজ শনিবার মুখোমুখি হচ্ছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
টেস্টে সর্বশেষ ছয় ম্যাচেই হারের স্বাদ নিয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে পাঁচটি ছিলো ইনিংস ব্যবধানে হার। কোনোরকম প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ তিন টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে হারে টাইগাররা। টেস্ট ক্রিকেটে এমন পারফরম্যান্সে চিন্তায় পড়েছে বাংলাদেশ। প্রশ্ন উঠেছে টেস্ট মর্যাদা নিয়ে।
এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার জন্য বাংলাদেশের একটি জয় অনেক বেশি দরকার হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় তারা পেয়েছে র্যাংকিংয়ে তলানির দল জিম্বাবুয়েকে। তবে তারা যা আশা করছে, তার চেয়ে পরিস্থিতি অনেক বেশি কঠিন হতে পারে। কারণ সদ্যই দেশের মাটিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজে দারুণ প্রতিন্দ্বন্দিতা করেছে জিম্বাবুয়ে। ১-০ ব্যবধানে সিরিজ হারলেও, জিম্বাবুয়ের লড়াকু মনোভাব ছিলো চোখে পড়ার মত।
যদিও আফ্রিকার দেশটি অতি সম্প্রতি নিজেদের পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছিল এবং ক্রিকেটীয় শক্তিতে বাংলাদেশের ধারে কাছেও ছিল না। তবে এই মুহূর্তে জিম্বাবুয়ে কিছুটা এগিয়েই আছে।
দু’দল এখন অবধি ১৬টি টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে সাতবার জয় পায় জিম্বাবুয়ে। ছয়বার জিতে বাংলাদেশ। বাকি তিন ম্যাচ ড্র’তে শেষ হয়।
সম্প্রতি সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে ১৫১ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছিল জিম্বাবুয়ে। তবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেই ঘুড়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ২১৮ রানের বড় ব্যবধানে জিতে সিরিজটি ১-১ সমতায় শেষ করে বাংলাদেশ।
যদিও বাংলাদেশের মত অনেক বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলে না জিম্বাবুয়ে। তারপরও সিলেটের জয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী জিম্বাবুয়ে। তবে এখনও স্পিনারদের বিপক্ষে দুর্বলতা রয়েছে জিম্বাবুয়ের।
বিকেএসপিতে বিসিবি একাদশের বিপক্ষে দু’দিনের প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে সেই প্রমান মিলেছে। ড্র হওয়া ম্যাচে, অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অকেশনাল স্পিনার শাহাদাত হোসেনের বিপক্ষে লড়াই করতে হয়েছে তাদের।
মূল লড়াইয়ে তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম ইসলামের বিপক্ষে খেলতে হবে জিম্বাবুয়েকে। তারা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অকেশনাল স্পিনার শাহাদাতের চেয়ে অনেক বেশি ভয়ংকর হবেন। তবে বাংলাদেশ স্পিনার সামলানোর ব্যাপারে আশাবাদী জিম্বাবুয়ে।
এমনটাই বলেছেন দলটির সিনিয়র খেলোয়াড় সিকান্দার রাজা। তিনি বলেন, আমাদের বিপক্ষে বাংলাদেশ স্পিনারদের রেকর্ড অনেক ভালো। কিন্তু আমরা মনে করি, অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা বাংলাদেশের এসেছি। আমরা কিছু শিখেছি, তা ম্যাচে কাজে লাগাতে চাই। তাদের স্পিনাররা অনেক বেশি উইকেট নিয়েছে। কিন্তু আমরা তাদের বিপক্ষে রান করতে শুরু করেছি। সিলেট টেস্টটি বড় উদাহরণ এবং আমরা ওই ম্যাচটি জিতেছিলাম।
- আরও পড়ুন >> চীনে গাড়ির বাজারে ধস: বিক্রি কমেছে ৯২ শতাংশ
জিম্বাবুয়ে যা ভাবছে তা বাংলাদেশের মাথাব্যথা নয়। টাইগারদের লক্ষ্য হারের বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসা। বিধ্বংসী স্পিন অ্যাটাক নিয়ে সিরিজের একমাত্র টেস্টটি খেলতে নামবে বাংলাদেশ। স্পিনারদের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের দুর্বলতা রয়েছে। এর অর্থ, টেস্টে তিন স্পিনার তাইজুল, মেহেদী ও নাঈমকে খেলাতে হবে।
বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো আগেই বলেছেন, দলে খুব বেশি পবির্তনে রাজি নন। তারপরও কিছু পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। বিশ্রাম দেয়া হয়েছে মাহমুদুল্লাহকে। তার পরিবর্তে একাদশে খেলবেন নিরাপত্তা শংকায় পাকিস্তান সফরে না যাওয়া মুশফিকুর রহিম।
একাদশ যাই হোক না কেন, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে বাংলাদেশের। তাই যেকোনো উপায়ে এই টেস্টে জিততে চায় বাংলাদেশ।