চীনের উহানে উৎপত্তি হওয়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের থাবা পড়েছে ইরানেও। এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইরানের ৬ নাগরিক মারা গেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
দেশটির কোম থেকে বাবোল, আরাক, ইসফাহান ও রাশত অঞ্চলে ভাইরাসটির বিস্তার ঘটেছে। এমনকি রাজধানী তেহরানের এক মেয়রসহ আক্রান্ত হয়েছেন ২৯ জন। ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে আগেভাগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ইরান সরকার।
আল জাজিরা জানিয়েছে, রোববার থেকে দেশটির ১৪টি প্রদেশে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু স্কুল-কলেজই নয়, চলতি সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত দেশটির সব সিনেমা হল ও শিল্পপ্রদর্শনী কেন্দ্রগুলোয় সব ধরনের কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
রাজধানী তেহরানের সব খাবারের দোকান ও কৃত্রিম পানির ঝরনাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এমনকি ১০ দিনের জন্য ফুটবল ম্যাচ ও অন্যান্য খেলাধুলা বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। সব শহরের ট্রেন ও বাসস্টেশনগুলো প্রতিদিন নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুনাশক ছিটানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
চীনে গত বছরের ডিসেম্বরে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার পর্যন্ত আক্রান্ত ৭৭ হাজার। বুধবার প্রথমবারের মতো সংক্রমণের কথা জানায় ইরান।
কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজধানীর দক্ষিণের শহর কোমে আক্রান্ত দুই প্রবীণ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ইরানে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। আর ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ২৯ জনের সংক্রমিত হওয়ার খবর নিশ্চিত করে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মুরতজা রহমান জাদেহ নামে এক ইরানি কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন। ওই ব্যক্তি রাজধানী তেহরানের ১৩ নম্বর জেলার মেয়র। এর মধ্যে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের সবাই ইরানি নাগরিক।
চীনের বাইরে এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ। শনিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এ তথ্য জানায়। শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিয়ানুস জাহানপুর জানান, এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া এদিন আরও ১০ জনের শরীরে এ ভাইরাস পাওয়া যায়।
- ‘প্রধানমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন তা ইউরোপ-আমেরিকাও পারবে না’
- ঢাকা-১০ আসনে লেমিনেটেড পোস্টারে নিষেধাজ্ঞা, মাইকে কড়াকড়ি
ইরানে কীভাবে করোনার মহামারী ছড়িয়ে পড়ল, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি দেশটির সরকার। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ইরানে কোম শহর থেকেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। শহরটিতে চীনা শ্রমিক রয়েছে। তাদের মাধ্যমে ভাইরাসটি স্থানীয়দের দেহে প্রবেশ করতে পারে।
সরকারের বরাত দিয়ে ইরানি রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল প্রেস টিভি জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে দেশের সর্বমোট ১৪টি প্রদেশের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রোববার থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রদেশগুলোর মধ্যে রয়েছে কোম, মারকাজি, জিলান, আরদাবিল, কেরমানশাহ, কাজভিন, জানজান, মাজানদারান, গুলিস্তান, হামেদান, আলবুর্জ, সেমনান, কুর্দিস্তান ও রাজধানী তেহরান।