বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬১৯ জনে। এর মধ্যে চীনেই মৃত্যুর সংখ্যা ২ হাজার ৫৯২ জন।
করোনা ভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৯ হাজার ৫৬১ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে ১১ হাজারের বেশি লোকের অবস্থা সংকটাপন্ন।
শুক্রবার পর্যন্ত করোনা ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৫ হাজার ২৩ জন। হতাহতদের মধ্যে বেশিরভাগই চীনের। তবে চীনের বাইরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
চীনের বাইরে করোনায় নিহত হয়েছেন- দক্ষিণ কোরিয়ায় সাত জন, জাপানের ডায়মন্ড প্রিন্সেস প্রমোদতরীতে তিন জন, ইতালিতে তিন জন, হংকংয়ে দুই জন, ইরানে আট জন, তাইওয়ান, জাপান, ফ্রান্স ও ফিলিপাইনে একজন। এ খবর দিয়েছে করোনা ভাইরাস নিয়ে লাইভ আপডেট দেয়া ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডমিটারস।
চীনে ধীরে ধীরে করোনায় আক্রান্ত ও নিহতের সংখ্যা কমে আসছে। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তবে চীনে এই সংখ্যা নিম্নমুখী হলেও বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে চলেছে।
চীনের সকল প্রদেশে শনাক্ত হয়েছে করোনা ভাইরাস। নিহতদের বেশিরভাগই হুবেই প্রদেশের। প্রদেশটির উহান শহর থেকেই বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। সংক্রমণ ঠেকাতে হাসপাতাল নির্মাণ, করোনা ভাইরাস শনাক্তের কিট আবিষ্কারে সরকারি অনুমোদনসহ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চীন। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আতঙ্কে জনমানবশূন্য ভৌতিক এলাকায় পরিণত হয়েছে চীনের একেকটি গ্রাম ও শহর।
রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। উহান শহরে স্টেডিয়াম, কনফারেন্স সেন্টারসহ কয়েকটি ভেন্যুকে অস্থায়ী হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে। এই ভাইরাস মোকাবেলায় শুরু থেকে তাদের অবহেলা ও দুর্বলতার কথা স্বীকার করেছে চীন। হুবেই প্রদেশের রাস্তা-ঘাট, অলি-গলিতে ওষুধ ছিটাচ্ছে প্রশাসন। এছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন মেডিকেল স্টাফরা। যাদেরকে সন্দেহ হচ্ছে তাদেরকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।
চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্তত ৩৩টি দেশ ও অঞ্চলে শনাক্ত হয়েছে।
করোনায় চীনের পরই সবচেয়ে ভয়াবহ হয়ে উঠছে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেস, ইতালি ও ইরানে। রোববার পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় ৭৬৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া জাপানের প্রমোদতরীতে ৬৯১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
- সুখবর আসছে ৪১ জেলায় স্থগিত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে
- আমরা বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে চাই: মালয়েশিয়ার মন্ত্রী
এরই মধ্যে ইরানসহ বেশ কয়েকটি দেশে করোনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান ও ইতালিতে বেশ কয়েকটি এলাকায় জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এমনকি জরুরি প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।
বেশকিছুদিন আগেই বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও। তবে চীনের বাইরে করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় আবারও সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সমস্যা দেখা দেয়।