ভারতের দিল্লিতে মুসলমানদের হত্যা-নির্যাতন, মসজিদ ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী। তিনি মুজিববর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জানানো আমন্ত্রণ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সরকারের কাছে এই দাবি জানান তিনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মুজিববর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের জনগণ দেখতে চায় না। মোদির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে গুজরাট, কাশ্মীর, দিল্লিসহ অনেক রাজ্যে মুসলমানদের খুন করা হয়েছে। চরম নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয়েছে। তাই যার হাতে এখনো মুসলিম গণহত্যার দাগ লেগে আছে, তার উপস্থিতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না। অবিলম্বে মোদির রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণ বাতিল করা হোক।’
কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকে ভারতীয় মুসলমানরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। আল্লামা শফী বলেন, ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সাম্প্রদায়িক সহাবস্থানের দেশ দাবি করলেও তা শুধু কথায়, কাজে নয়। শুধু মুসলিম হওয়ার অপরাধে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে প্রতিদিন। কাশ্মীরের মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে, মা-বোনদের ধর্ষণ করা হচ্ছে।’
ভারতের শত শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও ঐতিহ্য-অবদানে মুসলমানদের নাম মিশে আছে উল্লেখ করে আহমদ শফী বলেন, ‘চাইলেই এসব মুছে দেওয়া যায় না।
হেফাজতে ইসলামের আমির বলেন, ‘ইসলাম সব সময় মানবাধিকারের কথা বলে। অমুসলিম সম্প্রদায়কে নিরাপত্তাদানের কথা বলে। আমাদের দেশের মুসলমানেরা বারবার তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। মানবপ্রাচীর তৈরি করে মন্দিরে পাহারা দেওয়ার নজির আমরা দেখিয়েছি। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে বসবাস করছে। অথচ ভারতে এর উল্টো চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
ভারতীয় মুসলমানদের জানমাল ও পবিত্র স্থাপনা রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশ ও মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রতি অনুরোধ জানান হেফাজতে উসলামের আমির। তিনি বলেন, ‘জানমালের নিরাপত্তায় একতাবদ্ধ হওয়া আমাদের ধর্মীয় দায়িত্ব।
কাল শুক্রবার দেশের সব মসজিদে জুমার নামাজের পর ভারতসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য বিশেষ দোয়া করার জন্য জনগণের প্রতি অনুরোধ জানান আল্লামা শফী।