সমন্বিত নয়, চার ধাপে হবে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা

ক্যাম্পাস প্রতিবেদক

ইউজিসি
ফাইল ছবি

দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি, প্রকৌশল ও সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি ধাপে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে। তবে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, ব্যবসা শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে তিনটি ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে আলাদাভাবে।

এ ভর্তি প্রক্রিয়ায় দেশের ৩৪টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ। বুধবার ইউজিসি অডিটরিয়ামে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন।

কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আলাদাভাবে চারটি ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। তবে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে আলাদভাবে তিনটি গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, দেশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছে। তবে এ পদ্ধতিতে দেশের ৩৪টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করবে বলে চূড়ান্তভাবে জানিয়েছে। আমরা সবাইকে আহ্বান জানিয়েছি, যারা আসবে তাদের সবাইকে নিয়ে আমরা গুচ্ছ পদ্ধতিতে যুক্ত করবো।

তিনি বলেন, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এ পদ্ধতিকে সাধুবাদ জানালেও তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে তারা যুক্ত হতে পারছেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তবে আমাদের চেষ্টা ও দরজা খোলা থাকবে। যারা এতে যুক্ত হতে যাবে তাদের নেয়া হবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে ইউজিসির সদস্য মো. আলামগীর বলেন, মার্চের প্রথম সপ্তাহে আবারও বৈঠক করে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হবে। তারা উপকমিটি তৈরি করে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন, প্রশ্ন পদ্ধতি প্রণয়ন, ফলাফল প্রকাশসহ যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

তিনি আরও বলেন, আগের মতো প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন নেয়া হবে। আবেদনকারীদের রোল নম্বর অনুযায়ী গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা আয়োজন করে সেই অনুযায়ী প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলাফল পাঠিয়ে দেয়া হবে। সব কিছু কেন্দ্রীয় কমিটি ও উপ-কমিটির সদস্যদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত কলেজগুলোতেও গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।

এর আগে উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইউজিসি চেয়ারম্যান। বৈঠকে উপস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষাকে সবাই সমর্থন করেছেন। তবে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কাউন্সিল কমিটির সদস্যদের সম্মতি না থাকায় এতে যুক্ত হতে পারছে না বলে জানিয়েছে।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, প্রথমে সকলে সমন্বিত পদ্ধতিকে সমর্থন জানালেও এখন কেন কেউ কেউ পিছিয়ে যাচ্ছে? এটি একটি লজ্জার বিষয়, যা কেউ আশা করে না। যেসব সমস্যার কারণে অনেকে পিছিয়ে যাচ্ছে, তা চিহ্নিত করে সমাধানের মাধ্যমে সবাইকে যুক্ত করার আহ্বান জানান তিনি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ বলেন, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা স্বয়ং রাষ্ট্রপতি প্রত্যাশা করেন। দেশের মানুষও তাই চায়। তারপরও এই প্রক্রিয়ায় কেউ পিছিয়ে থাকাটা দুঃখজনক। তিনি গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করার প্রস্তাব জানান।

তিনি আরও বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজন করতে হবে। কেউ যেন এটি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান তিনি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে