বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে : বিএনপি

মত ও পথ প্রতিবেদক

বিএনপি
ফাইল ছবি

জনগণকে শোষণ করে আওয়ামী সিন্ডিকেটের মুনাফা আর লুটপাটের জন্যই সরকার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে গণপ্রতিরোধ গড়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

আজ শুক্রবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুতের দামবৃদ্ধির ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন- বিইআরসি। ঘোষণা অনুযায়ী পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বাড়ানো হয় বিদ্যুতের দাম। পাইকারিতে প্রতি ইউনিট ৪ দশমিক ৭৭ বেড়ে ৫ দশমিক ১৭ আর খুচরা পর্যায়ে প্রতি ইউনিট ৬ দশমিক ৭৭ থেকে বেড়ে ৭ দশমিক ১৩ করা হয়েছে।

এই হিসাবে পাইকারিতে বেড়েছে ৮ দশমিক ৪ ভাগ আর খুচরায় বেড়েছে ৫ দশমিক ১৩ ভাগ। আগামী মার্চ মাস থেকে বিদ্যুতের নতুন এই দাম কার্যকর হবে।

নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় সমালোচনা করেন বিএনপি নেতা রিজভী। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা না করে সম্পূর্ণ গণবিরোধী নিশিরাতের এই সরকার বিদ্যুৎ ও ওয়াসার পানির মূল্যবৃদ্ধি করেছে। গণমানুষ, ভোক্তা অধিকার কিংবা ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর যুক্তি-অনুরোধ কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে যখন মন চাচ্ছে গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে। জনগণকে শোষণ করে আওয়ামী সিন্ডিকেটের মুনাফার জন্য সরকার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করেছে।

রিজভী বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বাণিজ্য মন্দা এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দরপতনের মধ্যেই দেশে সব পর্যায়ে বিদ্যুতের পাইকারি ও খুচরা মূল্যবৃদ্ধির একমাত্র কারণ হলো লুটপাট। মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রাহকদের পকেট থেকে বছরে দুই হাজার কোটি টাকা লুটে নেবে আওয়ামী সিন্ডিকেট।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী দুঃশাসকদের আমলে এ নিয়ে নয়বার বাড়ানো হলো বিদ্যুতের দাম। বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ফলে সাধারণ মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে। বিদ্যুৎ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা হারাচ্ছে শত শত প্রতিষ্ঠান। গ্যাসের দাম বাড়ানোর মাত্র আট মাসের মাথায় আবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলো।

এছাড়াও সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার পরিণতি দেখে বর্তমান বিচারপতিরা খালেদা জিয়ার জামিনে সঠিক রায় দেয়ার সাহস করছেন না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রিজভী বলেন, দুই বছরের বেশি সময় ধরে কারারুদ্ধ খালেদা জিয়া তার বয়স, অসুস্থতাসহ সব বিবেচনায় জামিনের যোগ্য হলেও গণভবনের সরাসরি হস্তক্ষেপে জামিন পেলেন না। তাকে জামিন দেয়া হয়নি। আবার তাকে তার মানবাধিকার, মৌলিক সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলো।

তিনি বলেন, আদালতের ন্যূনতম স্বাধীনতা থাকলে খালেদা জিয়া জামিন পেতেন। এই বাংলাদেশে ফাঁসির আসামিরাও জামিন পায়। শত শত কোটি টাকা লুট করা ব্যক্তিরাও জামিন পায়। অথচ একজন মাত্র ব্যক্তির ক্ষমতালিপ্সা আর প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে নিজের পছন্দমতো সুচিকিৎসার সুযোগ দিতে জামিনও দেয়া হচ্ছে না।

বিএনপির এ নেতা বলেন, দেশের জনগণ সাক্ষী এই আদালতের সিটিং প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার সঙ্গে সরকারের ভিন্নমত হওয়ার কারণে চ্যাংদোলা করে বিদেশে তাড়িয়ে দিয়েছিল গানপয়েন্টে।

রিজভী বলেন, এখন যারা বিচারপতির আসনে, সাবেক প্রধান বিচারপতির পরিণতি দেখে তারা সঠিক রায় দেয়ার সাহস করছেন না।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে