ভারতের নয়াদিল্লিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ-সংঘর্ষের ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮ জনে দাঁড়িয়েছে বলে খবর দিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। আর আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই শর বেশি বলে জানিয়েছে দেশটির অনেক গণমাধ্যম।
সংঘর্ষে নিহতের মধ্যে পুলিশ সদস্যও আছেন। দিল্লির এ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
দাঙ্গার ঘটনায় আহতদের বিনা খরচে চিকিৎসার বন্দোবস্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, দিল্লির সহিংসতার ঘটনায় বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার মামলায় কেন্দ্র সরকারকে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে এদিন বাড়তি সময় চায় কেন্দ্র।
দিল্লিতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আর্জি জানিয়ে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের দ্বারস্থ হন সোনিয়া গান্ধী, মনমোহন সিংরা। রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাৎ শেষে কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দিয়েছি। কেন্দ্র ও দিল্লি সরকার নীরব দর্শকের মতো আচরণ করছে। রাষ্ট্রপতি আমাদের দাবি গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফর চলাকালেই রাজধানী দিল্লিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সমর্থক ও বিরোধীদের পাল্টাপাল্টি মিছিল থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। রাজধানীর কেন্দ্র থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে উত্তর-পূর্ব দিল্লির তিনটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে এই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় রূপ নেয়।
নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করছিল তাদের অবরোধের বিরুদ্ধে এক কিলোমিটার ব্যবধানে পাল্টা বিক্ষোভ করে এই আইনের সমর্থকরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এর সঙ্গে বিজেপির এক নেতা কপিল মিশ্র যুক্ত বলে জানা গেছে, যিনি নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে সপ্তাহব্যাপী অবস্থান নেয়া বিক্ষোভকারীদের হুমকি দিয়েছেন, তাদের বলেছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত ছাড়ার পরে তাদের জোর করে উচ্ছেদ করা হবে।
গত বুধবার রাতেও মুসলিম অধ্যুষিত উত্তরপূর্ব দিল্লির ভজনপুরা, মৌজপুর ও কারাওয়াল নগরে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল উত্তরপূর্ব দিল্লির সহিংসতা কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে ‘সরকার শান্তি ফিরিয়ে আনবে’, ব্যক্তিগতভাবে এমন আশ্বাস দিয়ে গেলেও শান্তি ফিরে আসেনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সফরে ২৪ থেকে ২৬শে ফেব্রুয়ারি ভারতে অবস্থান করেন।