এ সময়ে আপনার আসাটা কতটুকু শোভনীয়: মোদিকে ফখরুল

মত ও পথ প্রতিবেদক

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাহেব আসছেন, ভালো কথা, কিন্তু আমাদের সমস্যার সমাধান কতটুকু করছেন? আপনি কখন আসছেন, যখন দিল্লিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উপস্থিত রয়েছেন ও সে সময়ে নিকৃষ্টতম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অভিযোগ আসছে বিভিন্ন মহল থেকে, এই দাঙ্গার সঙ্গে আপনার দল অভিযুক্ত। সে সময় আপনার বাংলাদেশে আসাটা কতটুকু শোভনীয় হচ্ছে, সে বিষয়ে চিন্তা করা দরকার।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) আয়োজিত ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।

২ মার্চ আ স ম আবদুর রবকে কেন সম্মান জানানো হচ্ছে না বলে অনেকে আক্ষেপ করে বিেএনপি মহাসচিব বলেন, কেন দিবসটি পালন করা হচ্ছে না, এটাতো পালন করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্তু এখন যারা ক্ষমতায় আছেন তাদের সঙ্গে স্বাধীনতার কতটুকু সম্পর্ক সেটা এখন জনগণের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকে একাত্তরের সেই স্বাধীনতা যুদ্ধের যে চেতনা, যুদ্ধের পরে মানুষের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল এবং বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে মানুষ যে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিল তার আশা-আকাঙ্ক্ষা এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি।

মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকার জনগণের ম্যান্ডেট না নিয়ে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। তারা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের যে চেতনা সেটাকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। তারা প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আজকে শুধু আবদুর রবকে ভুলে যাচ্ছে না, স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা অবদান রেখেছিলেন তাদেরকে স্মরণ করেন না। ২৬ মার্চ যখন দেশ দিশেহারা হয়ে পড়েছিল, তখন চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, তাকেও তারা মনে করে না। মনে করে না তারা এমএজি ওসমানীকে, মনে করেনা মওলানা ভাসানীকে। তারা কখনোই স্বীকার করতে চায় না এ স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে দেশের সমস্ত মানুষ জড়িত ছিল।

তিনি বলেন, আজকের সরকার আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ সরকারের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। খালেদা জিয়া শুধু বিএনপি চেয়ারপারসন নয়, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, তাকে আজকে বেআইনিভাবে, অন্যায় ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটক করে অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসা সুযোগ দিচ্ছে না। তার জামিন পাওয়ার অধিকার, সে অধিকারটুকু তাকে দেয়া হচ্ছে না।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আজকে আমাদেরকে শপথ নিতে হবে- এ দেশকে যেমন ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছিলাম, আজকে আবারও আমাদের প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে হোক স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে। আসুন আজকে আমরা যারা দেশকে ভালবাসি, গণতন্ত্রকে ভালবাসি তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবানলের মতো একটা শক্তি সমস্ত কিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে, তাকে আমরা পরাজিত করে। জনগণের শাসনকে প্রতিষ্ঠা করি।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরু প্রমুখ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে