গ্রেফতার হওয়ার আগে নরসিংদী যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়াকে দেশ ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন সরকারের শীর্ষ এক কর্মকর্তা। তবে ওই কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেনি র্যাবের তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
র্যাবের এক কর্মকর্তা বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পর পাপিয়া ও তার সহযোগীদের একটি প্রোফাইল তৈরি করা হয়। পরে ওই প্রোফাইলটি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে দাখিল করা হয়।
র্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রোফাইলে পাপিয়ার অনৈতিক নানা কর্মকাণ্ডের বিবরণ ছাড়াও পাপিয়াকে সহায়তাকারীদের নাম ছিল।
পরে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে পাপিয়াকে গ্রেফতারে মাঠে নামে র্যাব। তবে আগেই এই খবর পৌঁছে যায় পাপিয়ার কাছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ক্ষমতার খুব কাছাকাছি অবস্থানে থাকা এক কর্মকর্তা পাপিয়াকে ভয়াবহ এ বিপদের খবর দিয়ে দ্রুত দেশ ছাড়ার পরামর্শ দেন।
এ খবর পাওয়ার পরপরই স্বামী মফিজুর রহমান সুমন ও দুই সহযোগীকে নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি তড়িঘড়ি করে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন পাপিয়া ওরফে পিউ। তবে সে চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয় দীর্ঘদিন পাপিয়া ও তার সহযোগীদের অনুসরণ করা র্যাবের ওই দলটি।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেই পাপিয়া, তার স্বামী মফিজুর রহমান সুমন এবং দুই সহযোগী সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবাকে গ্রেফতার করে র্যাব।
র্যাবের তদন্ত সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা বলেন, পাপিয়া ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে রাশিয়ান ১০ সুন্দরী মডেলকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানান। মূলত পাপিয়া তার সহায়তাকারীদের মনোরঞ্জনের জন্য রুশ ওই তরুণীদের ঢাকায় আনেন। তবে এতে বাদ সাধেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশে আগমনের সুনির্দিষ্ট কারণ জানাতে না পারায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দিতে রাজি হয়নি। পরে শীর্ষ ওই কর্মকর্তা ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে ফোন করে রুশ তরুণীদের প্রবেশে বাধা না দেয়ার জন্য বলেন। পরে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়।
কিন্তু ততক্ষণে বিমানবন্দরে কর্তব্যরত সব সংস্থা বিষয়টি জেনে যাওয়ায় ওই কর্মকর্তাকে নিয়ে কানাঘুষা শুরু হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রটি জানিয়েছে, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে এ তথ্য পৌঁছে গেলে ওই কর্মকর্তা অসুস্থতার দোহাই দিয়ে পরবর্তী কয়েকদিন অফিসে যাননি।
এসব ব্যাপারে র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘পাপিয়ার বিদেশ থেকে মডেল আনার খবর আমরাও শুনেছি। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত আমরা কিছুই জানি না। আমরা এই মামলার তদন্তভার চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। তদন্তের দায়িত্ব পেলে আমরা সব ব্যাপারেই বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।’