মুজিববর্ষে ‘চাঁদাবাজির দোকান’ খুলবেন না: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

মুজিববর্ষের নামে ‘চাঁদাবাজির দোকান’ না খুলতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আদর্শ ও চেতনা বজায় রেখে মুজিববর্ষ উদযাপনের নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, এমন কোনো কাজ করা যাবে না যা বঙ্গবন্ধুকে খাটো করে।

মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত দলের যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

universel cardiac hospital

মুজিববর্ষ উপলক্ষে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা আগামী ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে শুরু হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুজিববর্ষ উদযাপনের শুভক্ষণ ঘনিয়ে আসছে। এই দিনটিকে সামনে রেখে কিছু সাম্প্রদায়িক অপশক্তির অপতৎপরতা শুরু হয়েছে। মুজিববর্ষ সামনে রেখে সারা বিশ্বে ও বাংলাদেশে যে বর্ণাঢ্য আয়োজন, যা জনগণের মাঝে ঐক্যবদ্ধ আয়োজনের আবহ বিরাজ করছে এটা বিএনপি ও তার দোসরদের সহ্য হচ্ছে না। আজকে তারা নরেন্দ্র মোদির বিরোধিতার নামে মুজিববর্ষের বিরোধিতায় অবতীর্ণ হয়েছে। এটা আমরা মনে করি এবং এটাই আজকে জাতির বিশ্বাস। আসলে নরেন্দ্র মোদির আগমন নয়, মুজিব বর্ষ হচ্ছে তাদের টার্গেট।

কাদের বলেন, আমাদের প্রস্তুত, তৈরি ও সতর্ক থাকতে হবে, এই অশুভ মহলটি যাতে মুজিব বর্ষ উদযাপনের যে জাগরণ সারাদেশে সৃষ্টি হয়েছে তাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে। আমাদের এই আয়োজনকে যেন নস্যাৎ করতে না পারে সেজন্য এই চক্রান্ত ও অপতৎপরতাকে প্রতিহত ও প্রতিরোধ করতে হবে। এজন্য দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব ও তাদের দোসররা আজকে যে প্রোপাগান্ডা ও অপপ্রচার করছেন, আমি বলবো তারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকায় আগমনকে বিরোধিতা করতে গিয়ে মুজিববর্ষের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে মুজিববর্ষ, আর উপলক্ষ্য হচ্ছে নরেন্দ্র মোদির ঢাকা আগমন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, নরেন্দ্র মোদি কোনো বিশেষ ব্যক্তি নন, তিনি আমাদের একাত্তরের প্রধান মিত্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভারতীয় জনগণের প্রতিনিধি হয়েই আসছেন। নরেন্দ্র মোদি আসার প্রেক্ষাপট দিল্লির সাম্প্রতিককালের বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত দুই একটা ঘটনা, সাম্প্রদায়িক ঘটনাকে ঢাকায় আগমনের প্রেক্ষাপট নয়। আমাদের ১৭ মার্চের প্রেক্ষাপট বিশাল। এটা দীর্ঘ এক প্রেক্ষাপট, এর ঐতিহ্য ও ইতিহাস অনেক পুরোনো।

তিনি বলেন, ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের সঙ্গে ভারতীয় সৈন্যদের রক্ত মিশে গিয়েছিল। রক্তের বন্ধনে আজকে এই সম্পর্ক আবদ্ধ। কাজেই যখনই আমরা মুজিব বর্ষ উদযাপন করবো, তখন তা ভারতকে বাদ দিয়ে উদযাপন অর্থপূর্ণ হতে পারে না। ১৭ মার্চ শুধু নরেন্দ্র মোদি আসবেন, এছাড়াও ভারত ও পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা আসবেন। কাজেই একটি মহল ও বিএনপি তাদের উস্কানি দিচ্ছে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার জন্য। নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে তারা কিসের অশুভ লক্ষণ দেখতে পারছে সেটা আমরা জানি না।

কাদের বলেন, শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তাকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ভয় পায়। তারা মনে করছে মুজিববর্ষ উদযাপনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বাড়তেই থাকবে। এটাই তাদের ঈর্ষা। সে কারণে তারা ষড়যন্ত্র করছে। কাজেই আপনাদের প্রস্তুত ও তৈরি থাকতে হবে। নেত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন মুজিববর্ষ উদযাপন করতে হবে বিনয়ের সঙ্গে। আদর্শ ও চেতনা বজায় রেখে। এখানে কোনো বাড়াবাড়ি কেউ করতে পারবেন না। মুজিববর্ষ উদযাপনের নামে কেউ চাঁদাবাজির দোকান খুলতে না পারে সেটা সবার খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা যেন বাড়াবাড়ি করে বঙ্গবন্ধুকে ছোট না করি, খাটো না করি। খুব বেশি বঙ্গবন্ধুপ্রেমী হতে গিয়ে তার বিশাল ভাবমূর্তিতে আচড় না কাটি। এটা আমাদের নেত্রী বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণের নবনির্বাচিত মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস প্রমুখ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে