পাকিস্তান সফরে যেতে অস্বীকৃতি জানানোয় মুশফিকুর রহিমকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডে থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেছেন, দেশটি সফরে যেতে মুশফিকের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য এটি করা হয়নি।
সোমবার দেশ-বিদেশের গণমাধ্যম খবর দেয়, বিসিবির প্রধান নির্বাচকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুশফিক। ওই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল– তাকে পাকিস্তান সফরে অবশিষ্ট একমাত্র ওয়ানডে এবং টেস্ট ম্যাচ খেলতে ‘চাপ’ দেয়া।
মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এ নিয়ে কথা বলার সময় মিনহাজুল আবেদীন মুশফিককে চাপ বা কোনো হুমকি দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, পাকিস্তান সফরে যেতে রাজি না হলে মুশফিককে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে থেকে বাদ দেয়া হবে। কিন্তু এ ম্যাচে মাঠে নেমেছেন তিনি।
মিনহাজুল আবেদীন বলেন, আমরা মুশফিকের সঙ্গে বসেছিলাম। সেখানে টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে হেড কোচও ছিলেন। আমরা জানতে চাই- সে পাকিস্তানে যাবে কিনা।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার আমরা মিডিয়ায় দেখেছি– মুশফিক পাকিস্তানে যাবে না, আবার দেখলাম যাবে। তাই নিশ্চিত হতে বসি। এবার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে– দেশটি সফরে যাবে না সে।
তবে বিসিবির প্রধান নির্বাচক নিশ্চিত করেছেন, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে মুশফিক থাকবে না। বোর্ড জানিয়েছে, ওই ম্যাচে খেলানো হবে পাকিস্তান সফরের সম্ভাব্য দলকে। সে ক্ষেত্রে ওই ম্যাচে তাকে বাদ দেয়া হবে।
এর আগে কি হয়েছিল
বাংলাদেশ টেস্ট খেলতে পাকিস্তান সফর করবে কিনা- এ নিয়ে প্রায় মাসব্যাপী বিসিবি ও পিসিবির মধ্যে আলোচনা চলে। ওই সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। পাকিস্তান যাওয়া বা না যাওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।
এর পর বিসিবিপ্রধান নাজমুল হাসান পাপনও বলেন, ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে পাকিস্তানে কারা যাবে।
বাংলাদেশের সফর নিশ্চিত হওয়ার পর মুশফিক ঘোষণা দেন, পাকিস্তান যাওয়ার ব্যাপারে এখনই প্রস্তুত নন তিনি। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হলে এক বা দুই বছর পর ভেবে দেখবেন।
এর পর দুটি পৃথক সফরে পাকিস্তানে তিনটি টি-টোয়েন্টি ও একটি টেস্ট ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। বৃষ্টির কারণে একটি টি টোয়েন্টি ম্যাচ হয়নি। এ ছাড়া বাকি সব ম্যাচেই হারেন টাইগাররা।
এর পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেন মুশফিক। ২৬ ফেব্রুয়ারি নাজমুল হাসান বলেন, শুধু পরিবারের কথা না ভেবে দেশের সম্মানার্থে মুশফিকের পাকিস্তান যাওয়া উচিত।
তার ভাষ্যমতে, আমরা আশা করছি মুশফিক যাবে। শুধু সে-ই না, প্রতিটি চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়ের যাওয়া উচিত। এটি আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। দেশের কথাও চিন্তা করতে হবে। সবসময় নিজের কথা ভাবলে হবে না। যেটি আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
তিনি বলেন, প্রত্যেকের কাছেই নিজের ও পরিবারের কথা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দেশটা এর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তান একটা ভিন্ন ইস্যু। আগে নিজে থেকেই মুশফিক বলেছে, কাউকে আমরা জোর করিনি। আমি মনে করি সবার সঙ্গে কথাবার্তা বলে তার যাওয়া উচিত।
তথ্যসূত্র : বিবিসি