বাংলাদেশের স্থানীয় এবং আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাসহ ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য জনগোষ্ঠীর জন্য ৫ কোটি ৯০ লাখ ডলারের বেশি সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মঙ্গলবার (৩মার্চ) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার সদর দফতরে রোহিঙ্গা মানবিক সংকট মোকাবিলায় ২০২০ সালের যৌথ কর্মপরিকল্পনা (জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান বা জেআরপি) ঘোষণা করে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং সহযোগী এনজিওগুলো। জেআরপিতে ৮৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৮৭ কোটি ৭০ লাখ কোটি ডলার) তহবিল গঠনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর পরদিনই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ সহায়তার ঘোষণা এলো।
বুধবার (৪ মার্চ) বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার।
তিনি বলেন, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের এ সংকট মোকাবিলায় মানবিক সহায়তায় সাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এখনও শীর্ষস্থানে। ২০১৭ সালের আগস্টে সহিংসতার সূত্রপাতের পর থেকে প্রতি বছরই আমরা এ অবস্থানে রয়েছি। এই নতুন তহবিল ঘোষণার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের মোট মানবিক সহায়তা প্রায় ৮২ কোটি ডলারে দাঁড়াল। এর মধ্যে প্রায় ৬৯ কোটি ৩০ লাখ ডলারই দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য।
রবার্ট মিলার বলেন, গতকালের ঘোষণাসহ যুক্তরাষ্ট্রের জোগানো তহবিল বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ৯ লাখের বেশি শরণার্থীর জরুরি প্রয়োজনের পাশাপাশি চলমান সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত কক্সবাজারের স্থানীয় অধিবাসীদের প্রয়োজন মেটাতে সহায়তা করবে। উদারভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া স্থানীয় বাংলাদেশিদের কাছে যাতে মানবিক ও উন্নয়ন সহায়তা পৌঁছানো অব্যাহত থাকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার তা নিশ্চিত করায় অঙ্গীকারবদ্ধ। ২০২০ সালের ‘জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান’-এ তাদের চ্যালেঞ্জগুলোর প্রতি বাড়তি নীতিগত মনোযোগ প্রতিফলিত হওয়ায় আমরা আনন্দিত।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এ সংকটের বিশালমাত্রার প্রয়োজন একা পূরণ করতে পারবে না। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অনেক দাতা যে অবদান রেখেছে তাকে আমরা স্বাগত জানাই। অন্যান্য দেশকেও এ বিষয়ে অবদান রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা এ সংকট মোকাবিলায় সাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের উদারতা এবং রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি উভয় ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর কাছে সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করার জন্য তাদের অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রশংসা করি।
তিনি বলেন, এছাড়া আমরা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সচেতন সম্মতির ভিত্তিতে স্বেচ্ছামূলক, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান অব্যাহত রাখছি। আরও একটি জরুরি বিষয়- সহায়তার প্রয়োজন এমন মানুষদের মধ্যে নির্বিঘ্নে এবং স্থিতিশীলভাবে মানবিক সাহায্য পৌঁছানো নিশ্চিত করারও আহ্বান জানাই আমরা।