ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচন : ৭১ মামলায় অভিযুক্ত বিএনপির প্রার্থী রবিউল

মত ও পথ প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশন
ফাইল ছবি

ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে বৈধ ৬ প্রার্থীর মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ জাতীয় পার্টির প্রার্থী। আলোচিত এই তিন প্রার্থীই ব্যবসায়ী ও উচ্চশিক্ষিত।

কোটিপতি এই তিন প্রার্থীর মধ্যে ৭১টি ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্ত বিএনপির প্রার্থী শেখ রবিউল আলম। যার মধ্যে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ২৫ এবং তদন্তাধীন ৪৬টি।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মো. শফিউল আলমের নামে কোনো মামলা নেই। তবে মহানগর দায়রা আদালতে একটি বিচারাধীন মামলায় অভিযুক্ত জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাজী মো. শাহজাহান।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে প্রার্থীদের জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সাবেক সাংসদ শেখ ফজলে নূর তাপস পদত্যাগ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ঢাকা-১০ আসনটি শূন্য হয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী সবগুলো ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ‌্যমে ভোট গ্রহণ হবে। আগামী ২১ মার্চ ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

১৬টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় থাকা নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের শফিউল ইসলামের বাৎসরিক আয় ৩৯ লাখ ৭১ হাজার ৬১২ টাকা। ব্যবসার পরিচালক সম্মানী হিসেবে আয় করেন ২২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। এছাড়া এফডিআর ব্যাংক হিসেবের লভ্যাংশ ও বোর্ড মিটিং ফি হিসেবে বাৎসরিক আয় ১৭ লাখ ১৩ হাজার ৬১২ টাকা।

এম.কম পাস আওয়ামী লীগের শফিউল ইসলাম হলফনামায় বলেছেন, নিজ নামে স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ১৪ কোটি ২৫ লাখ ৬১ হাজার ১৬৪ টাকার। স্ত্রীর নামে রয়েছে ৫৮ লাখ ৯৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদ। স্ত্রীর নামে ২৬ লাখ টাকা দামের টয়োটা গাড়ির কথা উল্লেখ করলেও নিজের নামে কোনো গাড়ি নেই এ প্রার্থীর।

অন্যদিকে নিজ নামে কোনো জমি না থাকলেও যৌথ মালিকানায় থাকা জমি যার নিজ অংশের মূল্য ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ টাকা মূল্যের অকৃষি জমিসহ ৪৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের ফ্ল্যাটের কথা বলেছেন। যার ফলে এই প্রার্থীর স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ লাখ ৪১ হাজার ৭০০ টাকা। এছাড়া এক কোটি ৯৫ লাখ ৬৫ হাজার ৯২০ টাকার দেনার কথা উল্লেখ করেছেন।

ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিএনপি প্রার্থী ব্যবসায়ী শেখ রবিউলের ব্যবসা, শেয়ার বাজার ও সম্মানী বাবদ বাৎসরিক আয় ২৮ লাখ ৫৮ হাজার ৬১২ টাকা। অন্যদিকে আবাসন ব্যবসার সাথে জড়িত জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাহজাহানের বাৎসরিক আয় ৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।

স্নাতকোত্তর পাশ বিএনপির শেখ রবিউল আলমের নিজ নামে কৃষি, অকৃষি জমি, দালানসহ স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বলেছেন এক কোটি ৩৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে ১৬ লাখ ৩৬ হাজার ৫৩২ টাকার সম্পত্তি রয়েছে।

এছাড়া ২৪ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা মূল্যের একটি গাড়ির কথা উল্লেখ করেছেন। নিজ নামে ৬১ লাখ ৫৩ হাজার ২৫২ টাকার অস্থাবর সম্পত্তির কথা বলেছেন বিএনপির এই প্রার্থী। পাশাপাশি স্ত্রীর নামে ৩৯ লাখ ৪২ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পত্তির কথা জানিয়েছেন। তবে নিজ নামে কোনো ঋণ বা দায় নেই এই প্রার্থীর।

ইংরেজীতে এম.এ করা জাতীয় পার্টির শাহজাহান অস্থাবর সম্পত্তিতে ১৭ লাখ টাকা মূল্যের একটি গাড়িসহ শেয়ার, স্বর্ণালংকার মিলিয়ে অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বলছেন ৭৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এছাড়া স্ত্রীর নামে ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৫৫৬ টাকার সম্পত্তির কথা জানিয়েছেন।

হলফনামায় বলছেন, কৃষি জমি ও অ্যাপার্টমেন্টসহ নিজ নামে সম্পত্তির পরিমাণ এক কোটি এক লাখ টাকা। নিজ দায়সমূহের মধ্যে তিন কোটি টাকার ব্যাংক ঋণসহ স্ত্রীর কাছে থেকে চার লাখ ৭০ হাজার টাকায় ঋণ দায় হিসেবে উল্লেখ করেছেন জাতীয় পার্টির এই প্রার্থী।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে