বিএনপি প্রার্থীর ৭১ মামলা, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ১৬ কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

শফিউল ইসলাম-শেখ রবিউল আলম

ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৬ প্রার্থী। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে লড়ছেন এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. শফিউল ইসলাম। আর বিএনপির সমর্থন নিয়ে লড়ছেন শেখ রবিউল আলম।

এদের মধ্যে বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে মোট ৭১টি মামলা। এর মধ্যে ২৫টি বিচারাধীন এবং ৪৬টি তদন্তাধীন। রবিউল আলম বলছেন, তদন্তাধীন মামলা আরও থাকতে পারে, আমার জানা নেই।

তবে তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা নেই। বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে এত মামলা থাকলেও আওয়ামী প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।

অবশ্য পোশাক, কনস্ট্রাকশন, জাহাজ, অটোসিরামিক, মেরিন ড্রেজিংসহ মোট ১৬টি কোম্পানি রয়েছে আওয়ামী প্রার্থী শফিউল ইসলামের। এত বড় বড় কোম্পানির মালিক হলেও কোনো গাড়ি নেই তার! তারা দুজনই পেশায় ব্যবসায়ী। শফিউলের ১৬টি কোম্পানি থাকার পরও একটি গাড়ি না থাকলেও শেখ রবিউল আলমের একটি কোম্পানি রয়েছে এবং ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যে তার একটি গাড়িও রয়েছে।

আসন্ন উপনির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেয়া শেখ রবিউল আলম ও শফিউল ইসলামের হলফনামা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

হলফনামার তথ্যানুযায়ী, শফিউল ইসলামের থাকা ১৬টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ওনাস অ্যাপারেলস লিমিটেড, ওনাস গার্মেন্টস লিমিটেড, ওনাস ডিজাইন লিমিটেড, ওনাস কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, ওনাস শিপিং লাইন্স লিমিটেড, মজুমদার শিপিং লিমিটেড, অটোসিরামিক কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড, এ আর স্টাইল লিমিটেড, ওডিসি ড্রেসেস লিমিটেড, প্রিন্টো প্যাক লিমিটেড, প্যাট্রিশিয়ান নিট ওয়্যারস লিমিটেড, সিটাডেল অ্যাপারেলস লিমিটেড, জে বি এস গার্মেন্টস প্রাইভেট লিমিটেড, অ্যাকোয়া মেরিন ড্রেজিং লিমিটেড, ইয়ংতাই ইন্ডাস্ট্রিজ (বিডি) লিমিটেড এবং পি ওয়াই গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং (বাংলাদেশ) কোম্পানি লিমিটেড। আর রবিউল আলমের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স আর বি এন্টারপ্রাইজ।

আওয়ামী প্রার্থীর ঋণ রয়েছে এক কোটি ৯৫ লাখ ৬৫ হাজার ৯২০ টাকা। তার মধ্যে মো. মাহমুদুর রহমান খানের কাছ থেকে জামানতবিহীন ঋণ এক কোটি ১১ লাখ ১৩ হাজার ৯৬৫ টাকা, এনবিএল সিকিউরিটিস লিমিটেড থেকে ঋণ ৩৪ লাখ ৫১ হাজার ৯৫৫ টাকা এবং ভেঞ্চার এনার্জি রিসোর্স লিমিটেডের কাছ থেকে জামানবিহীন ঋণ নিয়েছেন ৫০ লাখ টাকা। তবে বিএনপি প্রার্থীর কোনো ঋণ নেই।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বাৎসরিক আয়ের মধ্যে পরিচালক হিসেবে সম্মানি পান ২২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আসে তার ১৭ লাখ ১৩ হাজার ৬১২ টাকা। আর বিএনপি প্রার্থীর বাৎসরিক আয়ের মধ্যে ব্যবসা থেকে আসে ২৭ হাজার ৫০০ টাকা, শেয়ার/সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক জামানত/সুদ ব্যবসা থেকে আসে ৫ হাজার ৪৩০ টাকা, রেমুনারেশন থেকে ৮ লাখ ১৮ হাজার ১৮২ টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে (১৯/ই ধারায়) আসে ২০ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা।

শেখ রবিউল আলমের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ টাকা ও ব্যাংকে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৩২০ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৬ লাখ ৯০ হাজার ৪৪০ টাকা, ২০ লাখ টাকার শেয়ার, সাড়ে ২৪ লাখ টাকা মূল্যের গাড়ি রয়েছে, ২০ তোলা অলঙ্কার, ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের ইলেকট্রিক সামগ্রী, ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের আসবাবপত্র, একটি ব্যবসার মূলধন ১ লাখ ৮১ হাজার ৪৯২ টাকা।

শফিউল ইসলামের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ২৯ লাখ ৭২ হাজার ৫৮০ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা করা অর্থের পরিমাণ ১ কোটি ৪৬ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩২ টাকা, বন্ড/স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় কোম্পানির শেয়ার পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি এবং প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে মোট ৫ কোটি ৮৬ লাখ ১৮ হাজার ৩৩৭ টাকা, পোস্টাল/সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৫ কোটি ৫৮ লাখ ৫৪ হাজার ১০৩ টাকা, ৬ লাখ ২০ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার, ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৮১২ টাকার ইলেকট্রিক সামগ্রী, ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকার আসবাবপত্র, অন্যান্য সম্পদ ৯০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। তার কোনো বাস, ট্রাক, মোটরগাড়ি ও মোটরসাইকেল ইত্যাদি নেই।

আওয়ামী রীগ প্রার্থীর স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৪৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট। আর বিএনপি প্রার্থীর স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৬ লাখ ৯৩ হাজার ৭৫০ টাকা মূল্যের ৭৫ শতাংশ কৃষিজমি, ৫২ লাখ ১৭ হাজার টাকা মূল্যের অকৃষি জমি এবং ৬ লাখ ৫০ হাজার ৭৫০ টাকা মূল্যের ১ হাজার ৩৫০ বর্গফুটের দুইতলা বাড়ি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে