মোদির আগমনকে ঘিরে ঝামেলা করলে কঠোর ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নওগাঁ প্রতিনিধি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর (মুজিববর্ষ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে ঘিরে ঝামেলা করলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে বলে সতর্ক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেছেন, মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে কোনো গোষ্ঠী দেশে অহেতুক ঝামেলা সৃষ্টি করতে চাইলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের রুখতে প্রস্তুত রয়েছে। দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রোববার নওগাঁর ধামইরহাটে মাদক কারবারিদের আত্মসমপর্ণ ও নতুন থানা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অনুষ্ঠান শুরু আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

universel cardiac hospital

নাগরিকত্ব প্রমাণে নতুন আইনের বিরোধিতা করায় ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে টানা চার দিন মুসলিম অধ্যুষিত উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সহিংসতা করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। এতে নিহত হয়েছেন মোট ৫৩ জন। আহত দুই শতাধিক। মসজিদ-মাদ্রাসা ভাঙচুর করে হনুমানের পতাকাও উড়িয়ে দেন নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে থাকা নরেন্দ্র মোদির সরকারের সমর্থকরা।

এ নিয়ে বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। বাংলাদেশেও হেফাজত ইসলামসহ সমমনা কয়েকটি ইসলামি দল মোদির আগমন ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তবে সরকার এটিকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। একই সঙ্গে মোদিকে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা দেয়ার কথাও ঘোষণা দিয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অকৃতিম বন্ধু দেশ। সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। তিনি ছাড়াও আমাদের অন্যান্য বন্ধুদেশের সরকার প্রধানরাও উপস্থিত থাকবেন। বিদেশি অতিথিদের উপস্থিতিতে দেশের কোনো গোষ্ঠী যদি দেশে অহেতুক ঝামেলা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের রুখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। কোনো অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে কঠোর হাতে সেই সব দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিন নওগাঁ জেলার ১১ উপজেলা থেকে ৫৬ জন চিহ্নিত মাদক কারবারিদের আত্মসমর্পণ করেন। মাদরেক বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাদকের কিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। মাদককে রুখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের সচেতনতা কর্মসূচির ফলে মাদক ব্যবসায়ীরা, চোরাকারবারিরা আজকে অন্ধকার পথ ছেড়ে আলোর পথে ফিরে আসছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৮৮ হাজারের ওপরে কারাবন্দি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩০ শতাংশ মাদক ব্যবসায়ী কিংবা মাদকসেবী। এতেই বোঝা যায় বর্তমানে দেশে মাদকের ছোবল কতটা। মাদকের এই ভয়াবহতা রুখতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। মাদকের সরবরাহ বন্ধ করতে দেশের সীমান্ত এলাকায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রুখতে মাদককে রুখতেই হবে। এই কাজে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পাশাপাশি সমাজের সকল মহলের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, যারা আজকে অন্ধকার জগৎ ছেড়ে আলোর পথে আসলেন তাদেরকে স্বাগত জানাই। শুধু আত্মসমর্পণের জন্য আত্মসমর্পণ যেন না হয়। ভবিষ্যতে এই প্রতিজ্ঞা ধরে রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

নওগাঁ পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী ও নওগাঁ-১ আসনের সাংসদ সাধন চন্দ্র মজুমদার।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নওগাঁ-২ আসনের সাংসদ শহীদুজ্জামান সরকার, নওগাঁ-৬ আসনের সাংসদ ইসরাফিল আলম, নওগাঁ-৩ আসনের সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদার, নওগাঁ-৫ আসনের সাংসদ নিজাম উদ্দিন জলিল জন, নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এ.কে.এম হাফিজ আক্তার, র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বিপিএম, জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ, ধামইরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান আজাহার আলী, পত্নীতলা উপজেলা চেয়ারম্যান আ. গাফফার প্রমুখ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে