সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় পতন হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের পুঁজিবাজারে। ভারতের পতনটি গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আর ঢাকার সূচক নেমে গেছে তার ভিত্তি সূচকের নিচে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২৭৯ পয়েন্ট বা ৬ শতাংশ। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭৬৯ পয়েন্ট কমেছে।
আর ভারতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বড় দরপতন হয় বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে। এই পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক সেনসেক্স ১৯৪১.৬৭ পয়েন্ট কমেছে। আর নিফটি সূচক পড়ে ৬৬২.৪ পয়েন্ট।
পুঁজিবাজারে এই ধস কোভিট-১৯ করোনাভাইরাসের প্রভাব বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস বৈশ্বিক ব্যবসা-বাণিজ্যেও থাবা বসিয়েছে। আর তাতে বিশ্ব পুঁজিবাজারেও ব্যাপক দরপতন হয়েছে। এর নেতিবাচক প্রভাব ভারত-বাংলাদেশে পুঁজিবাজারে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে বাংলাদেশের বাজার বেশ কিছুদিন ধরেই খারাপ যাচ্ছিল। আজ এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বাংলাদেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার খবর।
বাংলাদেশের পুঁজিবাজার
আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রায় ৯৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ বা ২৭৯ দশমিক ৩২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮ পয়েন্টে নেমেছে। এতে সূচকটি ভিত্তি পয়েন্টের নিচে অবস্থান করছে।
২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে ডিএসইএক্স ও ডিএস৩০ সূচক চালু হয়। ওই সময় ডিএসইএক্স সূচকের ভিত্তি পয়েন্ট ছিল ৪ হাজার ৫৫ পয়েন্ট। আর ডিএস৩০ ছিল এক হাজার ৪৬০ পয়েন্ট।
আজ ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ বা ৬৯ পয়েন্ট, আর ডিএসই শরীয়াহ সূচক ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ বা ৮৮ পয়েন্ট কমেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, করোনাভাইরাস আতঙ্কে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একধরনের ভীতি কাজ করছে। এতে পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে যাওয়াও বড় দরপতন হয়েছে। কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সাপোর্ট না থাকায় বাধাহীনভাবে কমেছে শেয়ারের দাম।
তবে ডিএসইতে আজ টাকার অঙ্কে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনশেষে ৪৯৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসের চেয়ে ৭০ কোটি ৪২ লাখ টাকা বেশি।
আজ ডিএসইতে ৩৫৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২টির, কমেছে ৩৫২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১টির শেয়ার দর।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭৬৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১২ হাজার ৩২৮ পয়েন্টে। সিএসইতে ৭০ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
ভারতের পুঁজিবাজার
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকার খবরে অস্থির হয়ে উঠেছে দেশটির পুঁজিবাজার। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক এই মন্দা দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে ভারতীয় বাণিজ্যে।
সোমবার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বড় দরপতন হয় এই বাজারে। লেনদেন শুরুর পর বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক সেনসেক্স এক ধাক্কায় ১৯৪১.৬৭ পয়েন্ট বা ৫.১৭ শতাংশ কমে যায়। এটি গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন।
- আরও পড়ুন >> নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর বাতিল : এএনআই
এনডিটিভির এক প্রতিবেদন জানায়, এদিন সেনসেক্স প্রায় ১৯৪১.৬৭ পয়েন্ট পড়ে দাঁড়ায় ৩৫,৬৩৪.৯৫ পয়েন্টে। আর নিফটি ৫৩৮.০০ পয়েন্ট পড়ে হয় ১০,৪৫১.৪৫। দিনের শুরুতে সেনসেক্স কিছুটা উঠলেও তা স্থায়ী হয়নি। এর পরেই পতন শুরু হয়। পরে অব্শ্য কিছুটা পুনরুদ্ধার হয় তা।
এর আগে গত শুক্রবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সেনসেক্স ১০০০ পয়েন্টের এশি কমে গিয়েছিল। ওই দরপতনে করোনা ভীতির পাশাপাশি ইয়েস ব্যাংক কেলেঙ্কারির বিষয়টিও প্রভাব ফেলে।