ধর্ষক প্রযোজক হার্ভে ওয়েনস্টেইনকে ২৩ বছরের কারাবাসের সাজা দিয়েছে আমেরিকার নিউ ইয়র্কের আদালত। ১১ মার্চ তার সাজা শোনানো হবে বলে আগেই জানিয়েছিল আদালত। সেই মতো বুধবার ঘোষণা হয় হার্ভের সাজা। এদিন হুইলচেয়ারে বসে হাতকড়া পড়া অবস্থায় আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন একাধিক ধর্ষণ ও যৌন হেনস্তা মামলার আসামি হার্ভে।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হলিউডের একসময়ের এই প্রভাবশালী প্রযোজককে ধর্ষণ ও যৌন হেনস্তার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছিল নিউ ইয়র্কের আদালত। এর পরই তাকে আটক করে নিজেদের হেফাজতে নেয় কর্তৃপক্ষ। সেদিনই জানানো হয়েছিল, কমপক্ষে পাঁচ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে হার্ভের। হয়েছেও তাই। হার্ভেকে দেয়া হয়েছে ২৩ বছরের কারাদণ্ড। এর ফলে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর বড় সাফল্যের মুখ দেখল #মিটু আন্দোলন।
বিশ্বজুড়ে তৈরি হওয়া #মিটু ঝড়ে প্রথম বিদ্ধ হলেন সম্ভবত হার্ভে ওয়েনস্টেইনই। প্রথমে এক মডেল-অভিনেত্রী সাহস করে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। সেটা সাহস জুগিয়েছিল বাকিদের। এরপর একে একে ৩০ জনের বেশি নারী হার্ভের কুকীর্তি প্রকাশ করেন। তাদের মধ্যে অ্যাশলে জুড, রোজ ম্যাকগোয়ানের মতো অভিনেত্রীরাও আছেন। যদিও প্রথম থেকে সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন হার্ভে। কিন্তু বেলাশেষে সমস্ত তথ্য প্রমাণ তার বিরুদ্ধেই গেছে।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে বহু নারীর সঙ্গে হার্ভে ওয়েনস্টেইন অশ্লীল আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ ছিল। সিনেমায় কাজের সুযোগ পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নতুন অভিনেত্রীদের নাকি তিনি নিয়মিত হোটেল রুমে ডাকতেন। সেখানে তাদের নানাভাবে হেনস্তা করতেন হার্ভে। জোরপূর্বক কয়েকজনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও গড়েছিলেন দণ্ডপ্রাপ্ত এই প্রযোজক। হেনস্তা ও ধর্ষণের শিকার সেসব নারীরাই মুখ খুলেছেন হার্ভের বিরুদ্ধে।
গত ৬ জানুয়ারি হার্ভের বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক অভিযোগের বিচার শুরু হয় নিউ ইয়র্কের আদালতে। বুধবার সেসব মামলার রায় ঘোষণা করেছে জুরি বোর্ড। এর মধ্যে ২০০৬ সালে মিমি হ্যালেইকে যৌন নির্যাতন এবং ২০১৩ সালে জেসিকা মানকে ধর্ষণের অভিযোগে হার্ভেকে দোষী সাব্যস্ত করে ২৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে মার্কিন আদালত। তবে নিষ্কৃতি পেয়েছে যৌন আঘাতের মতো গুরুতর অভিযোগ থেকে।