গর্ভনিরোধক পিল ‘আইপিল’। অনাকাঙিক্ষত গর্ভধারণ রুখতে অনেক নারী এটি সেবন করে থাকেন। অতিপ্রয়োজনীয় এই ওষুধটি যদি ভেজাল হয় তাহলে অনাকাঙিক্ষত গর্ভধারণ থেকে শুরু করে নানান শারীরিক সমস্যায় পড়তে হয় নারীদের। আর এমনই একটি কারখানার সন্ধান পেয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার সুরেস্বরী মার্কেটে রাতভর অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয় এসব নকল গর্ভনিরোধক পিল ও ভায়াগ্রা। যার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। এসময় একজনকে আটক করা হয়। অভিযানে জব্দ করা হয় নিম্নমানের মাস্ক।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় থেকে শুরু হওয়া অভিযান চলে গভীর রাত পর্যন্ত। অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন উর রশিদ।
এর আগে মঙ্গলবার এই মার্কেটে অভিযান চালিয়েছিল র্যাব। সেদিন নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার কারণে দুটি গোডাউন সিলগালা করেছিল র্যাব। কিন্তু সেই সিলগালার তালা ভেঙে মালামাল সরিয়ে নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এই ঘটনায় বাবুল নামের এক ব্যবসায়ীকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে।
সারওয়ার আলম বলেন, অভিযানে আমরা প্রায় পাঁচ কোটি টাকার অবৈধ ও নকল ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নামিদামি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে মানহীন, নকল, নিম্নমানের ও আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধের মজুদ পাওয়া গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন ফার্মেসিতে এ ওষুধগুলো সরবরাহ করা হতো। তাই এগুলো জব্দ করে গোডাউন মালিকের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়েছি। আমরা চাই না এই ধরনের নকল ওষুধ দেশব্যাপী ছড়িয়ে না পড়ুক। তাই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, এসব ওষুধ সেবন মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হবে, তাই জব্দ করা হয়েছে। অভিযানে কিছু নিম্নমানের মাস্কও পাওয়া গেছে। তবে অভিযানে আসার আগেই এখানে কর্মরত আটজন পালিয়ে যায়।
‘অভিযানে এই কারখানা থেকে শুধু নকল আইপিল কিংবা ভায়াগ্রা জব্দ করা হয়নি। উদ্ধার করা হয় ত্বকের সৌন্দর্য করার ক্রিম থেকে শুরু জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন ওষুধ। এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নকল এসব ওষুধ বাজাররাত করে আসছিল। এসব ওষুধ সেবনে মানুষের শরীরে হতে পারে ক্যান্সারসহ নানা রোগ।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন উর রশিদ বলেন, ‘ভায়াগ্রা বা আইপিল খোলার পর একটা হার্ডনেস ভাব থাকে। কিন্তু এখানে জব্দ করা ওষুধ খোলামাত্র গুড়া হয়ে যাচ্ছে। এগুলো যে কি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে তাও আমাদের জানা নেই। এসব ওষুধ সেবনে মানুষের শরীরে অনেক রোগ তৈরি করতে পারে।’